ঢাকা: এক বছর আগের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে নেওয়া শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩২টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ৩০টি বাস্তবায়িত বা নিষ্পত্তি হয়েছে।
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১২টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন-২০১৪’এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে দেওয়া গত বছরের সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বপ্ল মেয়াদী ৮টি সিদ্ধান্তের মধ্যে সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত স্কুলগুলোকে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করার কথা ছিল। এ বিষয়ে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে
জানানো হয় প্রতিবেদনে।
এছাড়া মধ্য মেয়াদী ৬টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন চালু করার উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষা বোর্ডসমূহের মতামত প্রাপ্তির পর বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ দুটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা ছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্বপ্ল মেয়াদে সরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগ, মিড-ডে মিল অ্যবাহত রাখা, নিয়মিত স্কুল মনিটর, ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলের তালিকা তৈরী, সমন্বিতভাবে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন, ক্লাসে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার সিদ্ধান্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
মধ্য মেয়াদী সিদ্ধান্তে জেলা-উপজেলা সরকারি কর্মকর্তাদের স্কুল পরিদর্শন, উপজেলা থেকে বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, রাঙ্গামাটি জেলার উপবৃত্তির বরাদ্দ বৃদ্ধি, মাধ্যমিক পর্যায়ের বৃত্তি জেন্ডারভিত্তিক করা এবং সরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকদের মত সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তানদের কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘ মেয়াদী ৬টি সিদ্ধান্তের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগে নীতিমালার পরিবর্তে বেসরকারি কর্মকমিশন গঠন, নারায়ণগঞ্জে কারিগরি মহাবিদ্যালয় স্থাপন, বরিশাল জেলায় দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন, চাকুরীরত অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মৃত্যু হলে তাদের সন্তানদের সরকারি খরচে পড়ালেখার নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ গ্রহণ, কম্পিউটার শিক্ষার জন্য উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কমিটি গঠনের উদ্যোগ, বিজ্ঞান মেলার আয়োজন নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
গণশিক্ষা মন্ত্রণায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণায়ের স্বপ্ল মেয়াদী ৬ সিদ্ধান্তের মধ্যে স্কুল মেরামত ও ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলের তালিকা তৈরি, হাওর এলাকায় উপবৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি, স্কুলভবন তৈরি মানসম্পন্ন হচ্চে কি না তা পরিদর্শন, গভীর নলকূপ স্থাপন, স্কুলের শিক্ষকদের শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে।
মধ্য মেয়াদী সিদ্ধান্তের মধ্যে স্কুলে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অনুরোধ, শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তির ডকুমেন্টশন তৈরীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তবে সিলেট বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য শর্ত শিথিল করার কথা হলেও এ সুযোগ রাখা হয়নি।
এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদী ৩ সিদ্ধান্তের মধ্যে পিটিআইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, পুল থেকে শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালা জারি এবং পিটিআইগুলোতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
মোট ৪৭৪টি সিদ্ধান্তের মধ্যে গত এক বছরে বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৩৬টি, শতকরা হিসেবে যার হার ৯২ শতাংশ।
৪৮টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কার্যালয়ের আওতায় এসব সিদ্দান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সম্মেলনে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবারের সম্মেলনের ২০টি অধিবেশনে ৩০৭টি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। ৩৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ আলোচনায় অংশ নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৪