যশোর: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর মঙ্গলবার হল ছেড়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা।
হল ছাড়ার সময় তারা আতঙ্ক ও উদ্বেগের প্রকাশের পাশাপাশি ফের ক্লাস শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তার কথাও তুলে ধরেন।
সোমবার দুপুরে ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলের জেরে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার করার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য যবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি চার ছাত্রকে বহিষ্কার ও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছেড়ে একে একে বাড়ির পথ ধরেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার রাতেই অনেক ছাত্র হল ত্যাগ করেছেন। বাকিরা মঙ্গলবার সকালে হল ত্যাগ করেছেন।
যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তনুশ্রী রায় বলেন, হঠাৎ করে বাইরে থেকে কিছু দুর্বৃত্ত এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে খুন করে চলে যাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
যবিপ্রবির ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরিফ হোসেন জানান, এভাবে হঠাৎ করে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। ফের কবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে তা কেউ জানে না।
পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বাপ্পা কুমার মণ্ডল জানান, ছাত্র রাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তারা কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চান না। কারণ ক্যাম্পাসে রাজনীতি শুরু হলেই হানাহানি বাড়ে। এতে শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
একই বিভাগের ছাত্র আকিমুল ইসলাম বলেন, যতদিন ক্যাম্পাসে রাজনীতি ছিল না, ততদিন সুষ্ঠুভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনীতির কোনো সুযোগ নেই। তারপরও ক্যাম্পাসে ছাত্র হত্যার ঘটনা ঘটে যাওয়ায় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার তদন্ত করে চার ছাত্রকে বহিষ্কার করেছে।
তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ নিয়ে রিজেন্ট বোর্ডের সভাও অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যত দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে প্রশাসন তৎপর বলেও জানান তিনি।
সোমবার দুপুরে দলীয় কোন্দলের জেরে ক্যাম্পাসে নাইমুল ইসলাম রিয়াদ (২৪) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী খুন হন। নিহত রিয়াদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে।
ছাত্রলীগের ইফতার পার্টিতে না যাওয়াকে কেন্দ্র করে রিয়াদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৪