রাজশাহী: বোনাস পেলেও বেতন না পাওয়ায় এবার ঈদ আনন্দ মাটি হতে চলেছে রাজশাহীর প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষক পরিবারে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে সরকারি হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়-কলেজ, কারিগরি ও ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে।
তাই শিক্ষক পরিবারগুলোর মধ্যে এখনও শুরু হয়নি ঈদের কেনাকাটা। ফিকে হতে শুরু করেছে বছর ঘুরে আসা ঈদের আনন্দ উৎসব। সরকার এরই মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-বোনাস ছেড়ে দিলেও নানা গণ্ডি পেরিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লেগে যায় তা পেতে। ফলে নির্ধারিত সময়ে কখনোই শিক্ষকরা বেতন-বোনাস পান না। এবারও ঈদের আগে বেতন না পাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন শিক্ষকরা।
মাহে রমজানের শেষ দশক চলছে। বুধবার ছিল ২৪ রমজান। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। কিন্তু বেতন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা। চারদিকে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ধুম পড়ে গেলেও এসব শিক্ষক পরিবারের পোশাক-পরিচ্ছদে ঈদের ছোঁয়া লাগেনি।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা সর্বসাকূল্যে বেতন পান ৯ হাজার ৫৩০ টাকা। আর এক বছর আগে নিয়োগপ্রাপ্তরা পান ৯ হাজার ৯০০ টাকা। তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা পাচ্ছেন প্রায় সাড়ে ১০ হাজার টাকা। প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টাকা। আর বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ শাখা ও কারিগরি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-কর্মচারীরা বিভিন্ন স্কেলে বেতন পেয়ে থাকেন। যার পরিমাণ ৬ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকার মতো। আর রাজশাহীতে এসব শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার।
অপরদিকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নয় কোডের সাধারণ শিক্ষকই বেশি। এ কোডের শিক্ষকরা সরকারি অনুদান পেয়ে থাকেন প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন হাতে পাননি। আবার রেজিস্টার্ড থেকে সরকারি হওয়া বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরাও দিন কাটাচ্ছেন আর্থিক দৈন্যতায়। একই স্কেলে বেতন-বোনাস পেলেও বেতন আটকে রয়েছে তাদেরও। নতুন করে যোগ হয়েছে ঈদ। এতে নাভিশ্বাস উঠছে তাদেরও।
জয়নাল আবেদীন নামে মহানগরীর একজন স্কুল শিক্ষক জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখনও জুন মাসের বেতন পাননি। তবে বোনাস পেয়ে কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আজ-কালের মধ্যে বেতন না পেলে ছেলে-মেয়েসহ পরিবার নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়বেন তারা।
তবে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাসেম জানান, এরই মধ্যে শিক্ষকরা তাদের বোনাস পেয়েছেন। ঈদের আগে তাদের বেতন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কাজ চলছে। শিগগিরই তারা বেতনও পেয়ে যাবেন। অন্য সময় বেতন আসতে সময় লাগলেও ঈদের আগে লাগবে না বলে জানান তিনি।
রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ভবশঙ্কর বর্মা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন বোনাসের টাকা সরকার ছাড় দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তা পেয়েও গেছেন। এমনটিই তিনি জানেন। তবুও কোনো প্রতিষ্ঠান না পেয়ে থাকলে আজকালের মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘন্টা, জুলাই ২৩, ২০১৪