ঢাকা: উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে। অন্য বোর্ডের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে ঢাকা বোর্ড।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ফল বিশ্লেষণ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা এমনটাই মনে করছেন।
চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষার সময় ইংরেজি, গণিত, রসায়ন, পদার্থসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকেও পাওয়া যায় প্রশ্নপত্র। প্রশ্ন ফাঁসের কারণে নতুন করে নেওয়া হয় ঢাকা বোর্ডের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা।
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর তদন্তে দুটি বিষয়ে প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেলেও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, প্রকাশিত ফলে প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়েনি।
বুধবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৪.৫৪ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় ১০ ধাপ বেড়েছে। সেবার ছিল ৭৪.০৪ শতাংশ। এর আগে ২০১২ সালে ৮১.৮১, ২০১১ সালে ৭৬.৮৯, ২০১০ সালে ৭২.১০ শতাংশ।
অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে এবার রাজশাহীতে ৭৮.৫৫ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৪.১৪ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৭১.৭৫ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭০.১৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭০.০৬ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৭৯.১৬ শতাংশ, যশোর বোর্ডে, ৬০.৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
ঢাকা বোর্ডে ঢাকা মহানগরীতে পাসের হার ৯৩.৬৯ শতাংশ। ঢাকা জেলাতেই ব্যবধান ১২ শতাংশ। ঢাকার পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলায় পাসের হারের ব্যবধান আরো বেশি।
ঢাকা মহানগরীতে ৭৫ হাজার ৬৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৭০ হাজার ৮৭৮ জন। ঢাকা জেলায় পাসের হার ৮১.৯৩, গাজীপুরে ৮১.৪৭, নারায়ণগঞ্জে ৮৩.৮০, নরসিংদীতে ৮৫.৭৯, মুন্সীগঞ্জে ৮২.৫৪, মানিকগঞ্জে ৮০.০৪, টাঙ্গাইলে ৮২.১০, ফরিদপুরে ৭৯.১২, মাদারীপুরে ৮২.৭৪, শরীয়তপুরে ৮০৮১, রাজবাড়ীতে ৭৮.৭৬, গোপালগঞ্জে ৮০৬৫, ময়মনসিংহে ৭৯.৮৬, কিশোরগঞ্জে ৭৯.৫০, নেত্রকোনায় ৭৮.৫১, জামালপুরে ৮৩.৬৩ ও শেরপুর ৮২.৯২ শতাংশ পাস করেছে।
এদিকে, পরীক্ষার সময় ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। তুলনামূলক শহরের শিক্ষার্থীরা সহজেই প্রশ্নপত্র পেয়ে যান ফেসবুকে। ফলে, ঢাকা মহানগরীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা আদান-প্রদান হয় সহজেই।
প্রকাশিত ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ডের অন্য জেলার তুলনায় ঢাকা মহানগরীর ফল তুলনামূলক ভালো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র ও গণিত দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পায়। ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষাটি স্থগিত করা হলেও হয়ে যায় গণিত দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা।
প্রকাশিত ফলে প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা নিশ্চিত বা নিশ্চিতের কাছাকাছি হয়ে সে বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করি। অন্য তিনটি বিষয়ের তারিখ ঠিক রেখে নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়েছি।
তিনি বলেন, ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য করা হয়েছিল। বাস্তবে যেগুলো হয়েছিল, তা আমরা নতুন করে পরীক্ষা নিয়েছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা অপরাধে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।
ভবিষতে প্রশ্ন ফাঁসে রোধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি জানিয়ে নাহিদ বলেন, আগে বলবো না। কারণ, অপরাধীরা জানতে পেরে সতর্ক হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৪