ঢাকা: প্রাথমিকে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রকৃত হিসাব বের করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ছবি দেখে তাদের হাতে পাঠ্য পুস্তক তুলে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
শনিবার দুপুরে (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে বাংলাদেশ পিটিআই কর্মকর্তা সমিতির কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, আমাকে এক জায়গায় প্রশ্ন করা হলো, এবার পিএসসিতে ২৭ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা শুরু হতেই দুই লাখ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলেই এলো না- কিভাবে হলো?
তিনি বলেন, আমার কাছে এই হিসাব মিলছে না, এই জন্য আমি হিসাব মেলাতে চাচ্ছি। কোথায় যেন একটা ফাঁক আছে, প্রাথমিকে ঝরে পড়ার সেই ফাঁক বের করতে চাই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেক ছাত্র ১ জানুয়ারি থেকে বই নেবে, তা ৭ থেকে ১০ দিন ধরেও নিতে পারে। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের বই তার বাবা অথবা মায়ের কাছে দেওয়া হবে না।
শিক্ষার্থীর এক কপি ছবি দিয়ে ছাত্রকেই তার বই স্কুল থেকে নিতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এজন্য শিক্ষার্থী কোন গ্রামের, সে কোন ক্লাসে পড়ে ও তার রোল নম্বর দিয়েই বই নিতে হবে। আমি দেখতে চাই শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সংখ্যাটা কত। তাহলে আমরা বুঝতে পারবো আমাদের অবস্থাটা কী!
পিএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সম্পর্কে গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে পরীক্ষার্থী মনে করে ওয়েবসাইট বা ফেইসবুকে প্রশ্ন পাবে, তা ধরে নিয়ে সে পরীক্ষায় গিয়ে যদি দেখে একটি প্রশ্নও কমন পড়েনি, তখন তার (পরীক্ষার্থীর) কি অবস্থা হতে পারে?
‘অবস্থাটা এই রকমই। আমি এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজছি। আমার হাতে কোনো ম্যাজিক নেই, ম্যাজিক্যাল চেয়ারে আমি বসিনি। এ থেকে উত্তরণের উপায় মনে হয় আমাদের কাছেই আছে। তা খুঁজতে হবে, এর জন্য কোনো গবেষণার দরকার নেই,’ বলেন মন্ত্রী।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের প্রত্যেক মানুষ যদি মনে রাখেন তিনি কোন দায়িত্বের রয়েছেন, তা যথাযথভাবে করছেন কি-না, বা তার যে দায়িত্ব সে কাজ আদায় করে নেওয়া হচ্ছে কি-না। সেই জায়গাতে মনোনিবেশ ঘটানো দরকার। তা যদি করা যায় তাহলে আমিসহ আমাদের নিয়ে যে সব ব্যর্থতার অভিযোগ উঠছে তা আর থাকবে না।
প্রশ্ন ফাঁসের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আগের দিনে পাওয়া প্রশ্ন এবং পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের মধ্যে কিছু অংশ জোড়া-তালি রয়েছে। এর মানে কোনো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর।
এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক শাহ সুফি মোহাম্মদ আলী রেজা, পিটিআই কর্মকর্তা সমিতির মহাসচিব মো. কুব্বত আলী খানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪