বাকৃবি: ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকরা।
সোমবার বাকৃবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই অনুষদের এক শিবির নেতাকে মারধর করার একপর্যায়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ছাত্রলীগের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয় শিক্ষক। পরে এর প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচার দাবিতে জরুরি সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় ওই অনুষদের শিক্ষকরা।
এছাড়া জরুরি সভা শেষে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.মো. ইদ্রিস মিয়া প্রশাসনের কাছে ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন।
এগুলো হলো, শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ, বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদান এবং শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা আহ্বান।
এদিকে, শিবিরকে বাঁচাতে আওয়ামী লেবাসধারী বিএনপি-জামায়াতের শিক্ষকরা ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে পাল্টা শিক্ষকদের বিচার দাবি করেছে ছাত্রলীগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের নেতা আলী রেজা নোমানকে মারধর করতে বেলা ১২ টার দিকে লাঠিসোঠা হাতে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আহমেদ, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরুল ইসলাম পলাশ ও তায়ফুর রহমান রিয়াদের নেতৃত্বে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে যায় কয়েকজন নেতাকর্মী।
এ সময় শ্রেণিকক্ষে অবস্থানকারী নোমানকে বাইরে ডেকে এনে এলোপাতাড়ি প্রহার ও লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে তারা।
ঘটনার সময় ওই অনুষদে উপস্থিত শিক্ষকরা নোমানকে ছাত্রলীগের হাত থেকে নিবৃত্ত করতে আসলে শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে গড়ায়।
এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনুষদের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
তবে ছাত্রলীগের অভিযোগ, অনুষদের শিক্ষকরা ছাত্রলীগের ৩ জনকে মারধর করে কক্ষে অবরুন্ধ করে রাখে ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা চালায়। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে অনুষদের বাইরে দিয়ে আসেন।
এরপর শিক্ষকদের বিচার দাবি করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই অনুষদ ঘেরাও করে বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ এসে ওই শিবির নেতাকে নিয়ে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই অনুষদের ফটক ছেড়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫