ঢাকা: প্রশ্ন ফাঁসকারীদের প্রতি এবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(ডিবি) শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান।
আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা সম্পর্কিত জাতীয় মনিটরিং কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে মারুফ হাসান একথা বলেন।
বুধবার সকালে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থীর জীবনে এসএসসি পরীক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, একজন ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে এসএসসি পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই পরীক্ষার পর একজন ছাত্র-ছাত্রীর জীবনের টার্নিং পয়েন্টে শুরু হয়। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত আমরা যারা স্টেক হোল্ডার আছি, পরীক্ষা সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে শেষ করার জন্য আমাদের আন্তরিকতাই যথেষ্ট।
‘আশ্বস্ত করতে পারি এবার যেই হোক এই সুষ্ঠু পরীক্ষার কাজে যারা বাধা দেবে প্রচলিত আইনে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ কোন অবস্থাতেই প্রশ্ন ফাঁস বা এ ধরনের গুজব কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্ন করে এ ধরনের সাহস কেউ দেখাবে না। আমি এই সমস্ত কাজে যারা জড়িত তাদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলতে চাই যদি এবার সাহস থাকে তবে আমাদের মোকাবিলা করুক। ”
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে সরকারের তৎপরতা শতভাগ ঢেলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কেউ অপরাধ করে আর পার পাবে না। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে ফেসবুকে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ালে বিটিআরসি সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দেবে।
প্রশ্ন ফাঁসে সন্দেহের এক নম্বর তালিকায় থাকা বিজি প্রেসের সংশ্লিষ্টদের পুরো তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এবার প্রেসের (বিজি প্রেস) প্রতি বেশি জোর দিচ্ছি। যারা ভাল কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের অপবাদ দিচ্ছি না। সেখানে যারা দুষ্ট লোক তাদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি এবার কোনভাবেই রেহাই পাবেন না। তারা শুধু না, তাদের বংশধর কারা কোথায় আছেন, তাদেরও মনিটরিংয়ের মধ্যে রেখেছি। তাদের বাবা-মা, ভাই-ফ্রেন্ডকার সঙ্গে বেশি আড্ডা দেন, প্রেমিক-প্রেমিকা কেউই বাদ নেই, সবাইকে মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। বিজি প্রেস এলাকা সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়ানো, ফেসবুকে প্রশ্নপত্রের নামে হুজুগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইন-১৯৮০(সংশোধিত ১৯৯৮)-এর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়ালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে।
ডিও লেটার-নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকতাগণের কাছে শিক্ষাসচিবের ডিও পত্র পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের জন্য লিংক স্থাপন করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় ও ত্বড়িৎ কার্যক্ষম একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ঠিকানা: কক্ষ নং-১৯২২, ভবন নং-৬, বাংলাদেশ সচিবালয়।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন: ৯৫৪৯৩৯৬, ০১৭৭৭-৭০৭৭০৫ ও ০১৭৭৭-৭০৭৭০৫।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ইন্টারনেট সংযোগসহ একাধিক আইটি বিশেষজ্ঞ থাকবে। ফেসবুকে বা অন্য কোনোভাবে তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে বিটিআরসি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জানিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একইভাবে দেশের ১০টি বোর্ডেই ভিন্ন ভিন্ন কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।
জাতীয় মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) স্বপন কুমার সরকারের সভাপতিত্বে সভায় শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত সচিব এ এস মাহমুদ, শিক্ষা বোর্ডসমূহের চেয়ারম্যান, যুগ্মসচিব(মাধ্যমিক)রুহী রহমান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব সাইদুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শিবানী ভট্টাচার্য, বিজি প্রেস, বিটিআরসি ও বিটিআরসি কর্মকর্তা, র্যাব সদর দপ্তরের উপপরিচালক(অপারেশনস্) মেজর ইবনে মঞ্জুরুল খালিদ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫
** বিজি প্রেসের দুষ্ট লোকদের প্রেমিক-প্রেমিকারাও মনিটরিংয়ে