ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষামন্ত্রীর অনুনয়

আর যেন কোনো পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত না হয়!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫
আর যেন কোনো পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত না হয়! শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

ঢাকা: বৃহস্পতিবারের (১২ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য কোনো দিনও নির্ধারণ করা হয়নি।



বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরীক্ষা স্থগিতের এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবারের পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বিকল্প কোনো তারিখ দিচ্ছি না। সামনে একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, কৌশলে চলতে হবে। আমরা এই আশায়ও আছি। এরপর তো আর তারা হরতাল আহ্বান করেননি।

আমরা আশা করবো, একুশে ফেব্রুয়ারির সম্মানে, শিক্ষার্থী ও জাতির স্বার্থে হয়ত ২০ দলীয় জোট পরবর্তীতে হরতাল নাও দিতে পারে। সে আশায় থাকলাম। তার সঙ্গে মিলিয়ে এই পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেবো।

পরীক্ষার্থীদের জন্য হরতাল আহ্বানকারীদের মনে ‘একটুও’ দয়া না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

চার দিনের পরীক্ষা পিছিয়ে, পঞ্চম দিনেরগুলো স্থগিত করে শিক্ষামন্ত্রী বিএনপি জোটের কাছে অনুনয়-বিনয় করে জানালেন, আর যেন কোনো পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত না হয়!

ছুটির দিন ছাড়া দু’সপ্তাহ ধরে হরতালের কারণে মোট ৩৭টি বিষয়ের পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হলো। বৃহস্পতিবারের পরীক্ষার আগের দিন বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আশা করছিলাম, এই সব হরতাল আহ্বানকারী বা ‘মহান কমান্ডাররা’ যারা মানুষ হত্যা করছেন, তাদের দিলের মধ্যে একটু দয়া হবে। কিন্তু আমরা আজকে পর্যন্ত কোনো লক্ষণই দেখলাম না। এতে করে পরীক্ষাগুলো নিতে পারলাম না।

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হরতালের কারণে ২, ৪, ৮ ও ১০ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা পেছানো হয়। বরাবরই জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নয়টি বিষয়ের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, বার বার ডেকে নিয়ে ছোটখাটো দু’এক মিনিটের কথা বলছি। এতে আপনাদের কষ্টও হচ্ছে। হয়ত বিরক্তও হতে পারেন। বিরক্ত হবেন না। আমাদের প্রতি আপনাদের যথেষ্ট সহানুভূতি রয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের বাধ্য করছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় প্রতিদিনই কিছু না কিছু ভোগান্তির মধ্যে পড়ছি। সব চেয়ে বড় ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা। ১৫ লাখ ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার জন্য আমাদের খুবই কৌশলের সঙ্গে নমনীয় হয়ে এগুতে হচ্ছে। আমরা তো নমনীয়ভাবেই চলবো; চলছি।

হরতাল ঘোষণার পর মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টা এই আশায় অপেক্ষা করেছিলাম, তারা হয়ত হরতালের তারিখ পরিবর্তন করতে পারেন। এই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক।

আপনারা হয়ত বলতে পারেন, আমি বেহায়ার মতো বার বার কেন বলছি! আমার বেহায়া-হায়ার ব্যাপার নেই। আমার ছেলেমেয়ে, দেশ, নতুন প্রজন্মের স্বার্থ। সে জন্য আমরা বিনয়ের সঙ্গে আবেদন করেছি। আমাদের ছোটবড় হওয়ার কিছু নেই।

তিনি ফের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আবারও আশায় থাকলাম। তাদের দিলের মধ্যে একটু রহম হবে। একটু দয়াবান হবেন। জাতির স্বার্থে, একুশে ফেব্রুয়ারি মাসে, মাতৃভাষার মাসে তারা নমনীয় হবেন।

সবার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি শনিবার, সবকিছু মিলিয়ে রুটিন ভিন্ন রকম করে সাজাবো। অন্য কোনো তারিখে পরীক্ষা নেবো। আবারও হরতাল দিলে আপনাদের দ্বারস্থ হবো। খুবই কৃতজ্ঞ আপনাদের (সাংবাদিক) সাহায্যের জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।