ঢাকা: মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালার আটটি ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ সোমবার (১৫ জুন) এ রুল জারি করেন।
গত বুধবার (১০ জুন) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মেধা তালিকার ভিত্তিতে নয়, পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তি করাতে হবে। কারণ সরকারের এ নীতিমালা সংবিধানের কয়েকটি ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করেছেন। রুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নীতিমালা ২০১৫ এর আটটি ধারা (২.১,৩.১,৩.২,৩.৩,৪.২, ৫.৩, ৯.১, ও ৯.৩) কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শিক্ষা সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে চার সপ্তাহের মধ্যে।
ইউনুছ আলী জানান, নীতিমালার ২.১ ধারায় বলা হয়েছে- ২০১৩ সালের আগে যারা এসএসসি পাস করেছে তাদের ভর্তি করা হবে না। ৩.১ ধারায় বলা আছে, ভর্তির জন্য কোনো বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। কেবল শিক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। ৩.২ ধারায়, বিভাগীয় শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ শতাংশ কোটা। ৩.৩ ধারায়- বিভাগীয় শহর ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ শতাংশ কোটা।
৪.২ ধারায়, আবেদন ফি ১৫০ টাকা, একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫ কলেজে পছন্দক্রম দিতে পারবে। অনলাইনে আবেদন করতে পারবে একবার। প্রতি কলেজের জন্য আবেদন ফি ১২০ টাকা।
৫.৩ ধারায়, এসএমএস প্রাপ্তির পর মেধাক্রম অনুযায়ী কলেজের নোটিশ বোর্ড বা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। কোনো কারণে আসন শূন্য হলে বোর্ডের পছন্দ অনুযায়ী ২য় মেধাক্রম প্রকাশ করতে হবে।
৯.১ ধারায়, সব কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। ৯.৩ ধারায় এ নীতিমালা না মানলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে
ইউনুছ আলী আরও জানান, এ নীতিমালা ৭, ২৬, ২৭, ২৮, ৩১, ৪০ ও ১৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর ২৩ অধ্যায় অনুসারে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। কিন্তু অন্য সব শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে।
এর আগে গত ১ জুন মেধা তালিকার ভিত্তিতে কলেজে ভর্তির জন্য নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নীতিমালার ৩.১, ৪.১, ৪.২, ৫.৩, ৯.১, ও ৯.৩ এই ছয়টি ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন হলিক্রস, নটর ডেম ও সেন্ট জোসেফ কলেজের তিন অধ্যক্ষ।
শুনানি শেষে গত সোমবার (০৮ জুন) আদালত এই তিন কলেজের জন্য নীতিমালার কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন। এছাড়া এ ছয়টি ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও চার সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
ইএস/এএ