ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রথম দিন ক্লাস করতে পারছে না লাখো শিক্ষার্থী

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
প্রথম দিন ক্লাস করতে পারছে না লাখো শিক্ষার্থী

ঢাকা: ফল প্রকাশে কারিগরি জটিলতা এবং নিজেদের ভুলের কারণে প্রথম দিন একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করতে পারছে না অর্ধ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী।
 
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের বিভিন্ন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হচ্ছে বুধবার (১ জুলাই)।


 
এদিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড প্রথম দিনে মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা দিতে না পারায় অনেক কলেজে দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (৩০ জুন) বাইরের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে। প্রথম দিন সোমবার (২৯ জুন) নিজেদের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়েছে কলেজগুলো।
 
এসএমএসের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে এবারই প্রথম সারা দেশে ‘স্মার্ট অ্যাডমিশন সিস্টেম’এ শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেয় সরকার। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সব কলেজে অনলাইনে ভর্তির একক সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান।
 
গত ২৫ জুন মনোনীতদের তালিকা প্রকাশের কথা থাকলেও চার দফা পিছিয়ে ২৮ জুন মধ্যরাতে একাদশে ভর্তির ফল প্রকাশ করে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড। অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও ফল প্রকাশে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডকে কারিগরি সহায়তা দেয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আইআইসসিটি।
 
অভিযোগ রয়েছে, অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রথমবারেই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অনলাইনে আবেদনের আওতায় আনায় হিমশিম খায় আইআইসিটি। কারণ, একজন শিক্ষার্থীকে একই সঙ্গে কলেজ, বিভাগ, বিষয়সহ একধিক তথ্য সন্নিবেশিত করতে হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী একাধিক আবেদনও করে। আর এতেই সৃষ্টি হয় কারিগরি জটিলতা।
 
১১ লাখ ৫৭ হাজার ২২৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থীকে স্থান দিয়ে প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়।
 
এসব শিক্ষার্থীরা সোমবার ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে গেলেও কলেজগুলো তালিকা না পাওয়ায় শুধু নিজেদের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়ে নেয়।
 
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিটি কলেজসহ রাজধানীর অনেক কলেজে তালিকা পেয়েছে বিকালে। ফলে প্রথম দিন তারা বাইরের শিক্ষার্থী ভর্তি করায়নি।
 
এছাড়া ভর্তি হতে গিয়ে একাডেমিক ট্র্যান্সক্রিপ্ট জটিলতায় পড়ে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বোর্ড থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট দেওয়ার কথা থাকলেও পরে সোমবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে বোর্ড থেকে একাডেমিক ট্র্যান্সক্রিপ্ট সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। বিধায় ভর্তির সময় ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত গ্রেডসিট প্রিন্ট করে জমা দিতে হবে।
 
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বিকাল তিনটার দিকে বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম দিন নিজেদের শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছি। সোমবার বিকেলে তালিকা পাওয়ায় আজ (মঙ্গলবার) বাইরের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হচ্ছে।
 
মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজেও একইভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এতেও বিভিন্ন কলেজে বিলম্বিত হয় ভর্তি প্রক্রিয়া।
 
এছাড়াও এক বিভাগের শিক্ষার্থী যোগ্যতা না থাকলেও অন্য বিভাগে মনোনীত হওয়ায় তারও ভর্তিতে বিলম্ব হচ্ছে।
 
ঢাকা সিটি কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ, মনিপুর কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন, বুধবার তারা প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করবেন।
 
আবেদন করেও বাদ পড়া ৫৩ হাজার ৮৫০ জন, যোগ্যতা না থাকলেও অন্য বিভাগে মনোনয়ন পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে প্রথম দিন ক্লাস শুরু থেকে বাদ পড়ছে প্রায় লাখো শিক্ষার্থী।
 
নিয়ম মেনে আবেদন করেও পছন্দের কলেজ ও বিভাগ না পাওয়ায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নীপা সুলতানা। লাখো শিক্ষার্র্থী ও তাদের অভিভাবকেরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে দাবি করেন তিনি।

এছাড়া মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে রেজাল্ট শিটে কোনো নম্বর না থাকায় ফল নিয়েই প্রশ্ন তোলেন নীপা।
 
এসব বিষয়ে শিক্ষাসচিব, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান, কলেজ পরিদর্শকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
 
এদিকে বোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী, বিলম্ব ফি ছাড়া ২৯ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত প্রথম মেধা তালিকা আর বিলম্ব ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া যাবে ৮ জুলাই পর্যন্ত।
 
আগামী ৬ জুলাই দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশের পর ১০ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি করানো হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।