ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বাংলানিউজকে ঢাবি সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন

সাংবাদিকতা শিক্ষা ও চর্চা পরস্পরের পরিপূরক

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৫
সাংবাদিকতা শিক্ষা ও চর্চা পরস্পরের পরিপূরক অধ্যাপক মফিজুর রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: সাংবাদিকতায় কৌশল ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান দুটোই জরুরি। এই দুটি বিষয়ের সমন্বয়েই সাংবাদিকতা এগিয়ে চলে।

সাংবাদিকতা শিক্ষা ও চর্চা একে অপরের পরিপূরক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা যত বেশি করে শেখানো হচ্ছে, সংবাদপত্র শিল্প তত বেশি বেশি যোগ্য কর্মী পাচ্ছে। আবার সাংবাদিকতা যত বেশি আধুনিক ও মানসম্মত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও তত বেশি এই বিষয়ে আগ্রহী ও মেধাবী শিক্ষার্থী পাচ্ছে।

সাংবাদিকতা চর্চা ও শিক্ষাদানের মধ্যে এভাবেই সাযুজ্য টানলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সদ্য নিযুক্ত চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মফিজুর রহমান।

তরুণ এই অধ্যাপক বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় বিভাগটি নিয়ে তার স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন। দেশের চতূর্থ স্তম্ভ হিসেবে সাংবাদিকতাকে শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে কী করণীয় সে বিষয়েও কথা বলেন।

মফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিকতা একটি প্রায়োগিক ক্ষেত্র। কেউ যদি প্রায়োগিক বিষয়ের সঙ্গে কৌশলও জানেন তিনি অবশ্যই এগিয়ে থাকবেন।

আধুনিক সাংবাদিকতা অনেক বেশি বিট নির্ভর, উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অনেক বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের পাশাপাশি কৌশলগুলো শিখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। একই সঙ্গে তত্ত্বীয় বিষয়গুলোও তারা শিখে যায়। এভাবে বলা যায় সাংবাদিকতার স্নাতকরা নিজেদের তৈরি করেই চাকরির বাজারে যাচ্ছেন। ফলে সংবাদপত্র শিল্পও তার সুফল পাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা আর প্রায়োগিক ক্ষেত্রের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য এরপরেও থেকে যায় এমন মত দিয়ে অধ্যাপক মফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পড়ায় পুরোপুরি অ্যাকাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে। তাদের যোগাযোগ ও  সাংবাদিকতা বিষয়ে বিদ্বান করে তোলা প্রধান কাজ। এর পাশাপাশি প্রায়োগিক ক্ষেত্রগুলোতে জ্ঞান ও চর্চা নিশ্চিত করা হয়। এরপরেও একজন শিক্ষার্থী যখন কাজে যোগ দেয় তখন তার প্রয়োজন হয় প্রশিক্ষণ।

সংবাদপত্রগুলোতে ‘ইন হাউজ ট্রেনিং’র ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দ্রুতই কৌশলগুলো রপ্ত করে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীরা ভালো সাংবাদিক হয়ে উঠতে পারে।

কেবল সাংবাদিকতা শিখেই সাংবাদিক হওয়ার চেয়ে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান নিয়েও শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসতে পারে বলে মত দেন অধ্যাপক মফিজুর রহমান। এমবিবিএস পাশ করে যদি কেউ হেলথ বিটে, অর্থনীতির শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিষয়ে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পড়ে কূটনীতিক রিপোর্টিং, রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ে রাজনীতি বিটে কাজ করলে তাদেরও ভালো করার সম্ভাবনা থাকে। কারণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের জ্ঞান রয়েছে। শুধুমাত্র সাংবাদিকতা কৌশলগুলো শিখে নিলেই চলে।

বাংলাদেশে সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রথম প্রধানতম বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। ১৯৬২ সালে যাত্রা শুরুর পর ৫৩টি বছর পার করেছে এই বিভাগ গত। গত ২ আগস্ট ছিলো বিভাগটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। নানা আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের ব্যস্ততার মাঝেই বাংলানিউজের সঙ্গে এই একান্ত সাক্ষাৎকারে মিলিত হন অধ্যাপক মফিজুর রহমান। তিনিই এ বিভাগের প্রথম চেয়ারপার্সন যিনি এ বিভাগ থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তার সঙ্গে কথা হয় বিভাগের সাংবাদিকতা শিক্ষার বিভিন্ন দিক, কারিকুলাম, প্রযুক্তি, সুযোগ ও সম্ভাবনাসহ বিভিন্ন বিষয়েও।

বাংলানিউজ: আন্তর্জাতিকভাবে সাংবাদিকতা শিক্ষা আজ বহুদুর এগিয়েছে। সে তুলনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ কতটা এগিয়েছে বলে মনে করেন?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: এটা ঠিক যে আন্তর্জাতিকভাবে সাংবাদিকতা শিক্ষা আজ অনেকদুর অগ্রসর হয়েছে। তবে সিলেবাসের কথা যদি ধরা হয়, তাহলে বলবো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস আন্তর্জাতিক মানের। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশের সাংবাদিকতা শিক্ষা সম্পর্কে আমার ধারণা লাভের সুযোগ হয়েছে। সেখান থেকে আমি যেটা বুঝতে পেরেছি তা হল, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের শিক্ষার মুল পার্থক্য হচ্ছে শিক্ষাদান পদ্ধতিতে। আমাদের শিক্ষাটা অনেক বেশি ক্লাসরুম নির্ভর হয়ে পড়েছে। ক্লাসের বাইরে পড়াশুনা করতে শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহ কম। আমরা একটি নির্দিষ্ট কোর্স সম্বন্ধে ধারণা দিই। কিন্তু বিস্তারিতভাবে জানার দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিজেরই। পক্ষান্তরে বাইরের দেশের শিক্ষাদান পদ্ধতি একটু ভিন্ন। ওরা কোর্স শুরু হওয়ার আগেই বড় বড় ভলিউমের বই ধরিয়ে দেয়। সেগুলো শিক্ষার্থীদের পড়ে আসতে হয়। এরপর ক্লাসে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন আহ্বান করেন। এভাবেই তারা ক্লাস পরিচালনা করেন।

শিক্ষাপদ্ধতির এই ভিন্নতার কারণও আছে। কারণ বাইরের দেশের ক্ষেত্রটাও অনেক নির্দিষ্ট। তাই তারা হয়তো, পাবলিক রিলেশন বা আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ওপরই দুই বছরের একটা মাস্টার্স করে ফেলে, যেটা আমরা একটা কোর্স হিসেবে পড়াই। তাই ওদের জানার ব্যাপকতা একটু বেশি। আমাদের দেশে বিস্তারিত জানার সুযোগটাও সীমিত। কারণ আমাদের চাকরির বাজার অতটা স্পেসিফিক এখনও হতে পারেনি। তাই ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা’ নামক একটি বিশাল ব্যানারে আমাদেরকে সবগুলো কোর্স সম্বন্ধেই ধারণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্যাকেজ শিক্ষা দেওয়া হয়। যাতে তারা চাকরির বাজারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে।
বাংলানিউজ: আপনি যেটা বললেন যে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রটা অনেক বেশি প্রায়োগিক বা ব্যবহারিক। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে ব্যবহারিক জ্ঞান দানের জন্য প্রযুক্তিগত কি সুবিধা রয়েছে এখানে?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: কাজ চালিয়ে নেওয়ার মত প্রযুক্তিগত সুবিধা আমাদের রয়েছে। তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়। প্রযুক্তি যত দ্রুত এগিয়ে চলছে আমাদের আর্থিক সঙ্গতি কিন্তু তত দ্রুত বাড়ছে না। স্টিল বা ভিডিও ক্যামেরার লেটেস্ট যে মডেলটা বেরিয়েছে সেটা হয়তো তাৎক্ষণিক আমরা কিনতে পারছি না। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের প্রেক্ষাপটেই আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

বাংলানিউজ: ১৯৬২ সালে যখন বিভাগটি প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ছিল প্রিন্ট মিডিয়া অর্থাৎ কাগজে ছাপা পত্রিকার যুগ। এরপর ৯০ দশক থেকে শুরু হলো টেলিভিশন সাংবাদিকতা এবং বর্তমান কালকে বলা হচ্ছে অনলাইন সাংবাদিকতার যুগ। সময়ের সঙ্গে সাংবাদিকতার এই যে বিবর্তন, এই বিবর্তনের সঙ্গে বিভাগ কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছে? নতুন কোর্স কি সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: হ্যাঁ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকতার ধরণ ও প্রযুক্তিগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের বিভাগও এগিয়েছে তাল রেখে। টেলিভিশন সাংবাদিকতার যুগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিভাগে টেলিভিশন কনটেক্সট অ্যান্ড কনটেন্ট,  ব্রডকাস্ট জার্নালিজম, ভিডিও প্রডাকশন কোর্সগুলো চালু হয়। বর্তমানে অনলাইনের প্রভাব শুরু হয়েছে। আরও আগে থেকেই আমাদের বিভাগে অনলাইন জার্নালিজম নামে কোর্স চালু হয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এনভায়রনমেন্টাল জার্নালিজম, সায়েন্স রিপোর্টিং, কনফ্লিক্ট জার্নালিজমের মত কোর্সও ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে চালু আছে।

বাংলানিউজ: এই বিভাগ থেকে পাশ করেও স্নাতকদের একটা বড় অংশ সাংবাদিকতায় থাকছে না। বরং অন্য পেশাকে বেছে নিচ্ছে। এর মূল কারণ কি বলে আপনার মনে হয়?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: বিভাগটি কিন্তু ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা’। এখানে যোগাযোগটাই প্রধান বিষয়, সাংবাদিকতা এর একটি অংশ মাত্র। সুতরাং আমরাও আশা করি না যে আমাদের সব শিক্ষার্থীই সাংবাদিকতায় থাকবে। তারা যোগাযোগের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করবে, বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ইনফরমেশন এন্ড ডকুমেন্টেশনে কাজ করবে, পাবলিক রিলেশনস অফিসার হবে, অ্যাড এজেন্সি, প্রোডাকশন হাউজ ও ফিল্ম ইন্ড্রাস্টিতে ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কাজ করবে, যোগাযোগ কর্মকর্তা হিসেবে সে বিভিন্ন এনজিওতে কাজ করবে। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।

অনেকে আমাদের বিভাগ সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা পোষণ করেন। তারা ভাবেন আমাদের বিভাগে কেবল সাংবাদিকতাই শিক্ষা দেওয়া হয়। তাইতো অনেকে বিভাগের পুরো নামটাও না বলে কেবল বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগ। কিন্তু আমাদের বিভাগে যোগাযোগ বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। তবে সাংবাদিকতা এর একটি বড় অংশ।

বাংলানিউজ: দেশে সাংবাদিকতা ও মিডিয়া শিক্ষার দ্রুত প্রসার ঘটছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়টি চালু করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও সম্প্রতি সরকারি কলেজগুলোতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ চালুর একটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়টিতে কিভাবে দেখছেন?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কলেজে যোগাযোগ বিষয়টি চালু করুক সেটা আমাদেরই সুপারিশ ছিল। শুধু কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির জন্যই নয় জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই আসলে যোগাযোগ ব্যাপারটি অপরিহার্য। এক সময়ে বলা হত মানুষ সামাজিক জীব। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে মানুষ হচ্ছে ‘কমিউনিকেটিভ’ জীব। কারণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে যতটা দক্ষ জীবনে সে ততবেশি সফল। তাই কমিউনিকেশনের বেসিক লিটারেসিটা আসলে সবার থাকা খুবই জরুরি। সে ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যদি যোগাযোগ বিষয়টি চালু করে তবে তাদের সাধুবাদ জানাবো। তাছাড়া বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তাই পাবলিক প্রাইভেট প্রতিটি ক্ষেত্রেই যে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রসার ঘটবে এটিই স্বাভাবিক।

বাংলানিউজ: দেশের সাংবাদিকতার প্রসার ও উৎকর্ষ সাধনে ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগ কি কি ভুমিকা রেখেছে বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: ১৯৬২ সাল থেকে গত ৫৩ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ প্রায় তিন হাজার গ্রাজুয়েট বেরিয়েছে। যাদের একটা বড় অংশ সাংবাদিকতায় রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। গণমাধ্যম সেক্টরে আজ যারা সফল তাদের বেশিরভাগেরই ফাউন্ডেশনটাই কিন্তু এখান থেকে পেয়েছে। পরবর্তীতে তারা হয়তো আরও উচ্চশিক্ষা নিয়েছে ইন হাউজ ট্রেনিং নিয়েছে। তাই বর্তমানে সাংবাদিকতার যতটুকুই উৎকর্ষতা তার পিছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ কারিগরের ভুমিকা পালন করেছে বলে আমি মনে করি।

বাংলানিউজ: চেয়ারম্যান হিসেবে বিভাগ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাই।

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: আমাদের বিভাগে এমফিল প্রোগ্রাম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। কারণ বিভাগে অনার্স, মাস্টার্স এমনকি পিএইচডি প্রোগ্রাম থাকলেও এমফিল নেই। আমাদের বিভাগেরই অনেক গ্রাজুয়েট যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন বা গণমাধ্যমেরও অনেকে রয়েছেন যারা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় গবেষণা করতে আগ্রহী। যারা আমাকে বলেছেনও। তাই আমি চেষ্টা করবো এমফিল প্রোগ্রামটি চালু করতে।

আর আমার যেটা বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে সেটি হচ্ছে ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা’র ওপর একটি জাতীয় পর্যায়ের একাডেমিক কনফারেন্সের আয়োজন করা। কারণ জ্ঞান উৎপাদন ও গবেষণার ক্ষেত্রে এমন একটি কনফারেন্স খুবই গুরুত্বপুর্ণ বলে আমি মনে করি। আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আগ্রহী পেশাদার সাংবাদিকদের কাছে গবেষণাপত্র আহ্বান করবো। এ কনফারেন্সে তারা সেটি উপস্থাপন করবেন। সব মিলিয়ে শিক্ষক-গবেষক ও শিক্ষার্থীদের একটি মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বাংলানিউজ: আগে এ বিভাগের অধীনে একটি রিজিওনাল মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু ছিল। যেখানে বাইরের শিক্ষার্থীরা পড়ার সুযোগ পেতেন। অদুর ভবিষ্যতে সে ধরনের কোন কোর্স চালুর সম্ভাবনা আছে কিনা?

অধ্যাপক মফিজুর রহমান: আমাদের সে প্রোগ্রামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত একটি ফলপ্রসু প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু নরওয়ের অর্থায়নে সে প্রোগ্রামটির মেয়াদ ছিল চার বছর এবং আমিই সে প্রোগ্রামের সেক্রেটারি ছিলাম। সেটি এখন বন্ধ রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আমরা যদি সেরকম ফান্ড বা মেকানিজম নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ওই কোর্স বা একই ধরনের কোর্স চালু হতেও পারে।

বাংলানিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক মফিজুর রহমান: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৫
এসএ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।