ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবির ই-লাইব্রেরি

পাঠোপযোগী পরিবেশে বিশ্বমানের সুবিধা

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৫
পাঠোপযোগী পরিবেশে বিশ্বমানের সুবিধা ছবি: বাংলানিউজেটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: এই ই-লাইব্রেরি পড়াশোনার জন্য বিশ্বমানের সমস্ত উপকরণ আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। যেটা ম্যানুয়াল লাইব্রেরিতে কখনোই সম্ভব ছিল না।

চাইলেই একাডেমিক পড়াশোনাসহ যে কোনো ধরনের পড়াশোনার সুযোগ এখানে রয়েছে।

সবচেয়ে বড় কথা এখানকার কোলাহল মুক্ত নীরব পরিবেশে চাইলেই পড়াশোনার প্রতি শতভাগ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য অনুষদে সদ্য চালু হওয়া ই-লাইব্রেরি সম্পর্কে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিউল ইসলাম।

অনুষদের পুরাতন ভবনের চারতলায় অবস্থিত এ লাইব্রেরিতে ঢুকেই দেখা গেল সফেদ আলোর এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। যা যে কারো মনে স্নিগ্ধতার পরশ বুলাতে বাধ্য। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মনোরম কক্ষ। পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সুসজ্জিত সব আসবাবই চোখে পড়ল এখানে।

গেটের ডানদিকের অংশে দেখা গেল অনলাইনে পড়াশোনায় ব্যস্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী। আবার কয়েকজনকে দেখা গেল ‘গ্রুপ ডিসকাশন’ রুমে গোল হয়ে বসে পড়াশোনা সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত।

সম্পূর্ণ ডিজিটাল সুবিধা থাকলেও পুরাতন ম্যানুয়াল সুবিধাও বহাল রয়েছে লাইব্রেরিটিতে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রিন্ট ভার্সনের বইগুলোও রয়েছে।

ম্যানুয়াল সুবিধা রাখার যৌক্তিকতা ধরা পড়ল একটু সামনে এগোতেই। জনা দশের শিক্ষার্থীকে দেখা গেল তারা প্রিন্ট ভার্সনের বই পড়ছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ খাতায় টুকে নিচ্ছেন। এছাড়া ফটোকপি এবং প্রিন্টিং সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জার্নাল ও বই প্রিন্ট করে বাসায় নিয়েও পড়তে পারে বলে জানালেন শিক্ষার্থীরা।

সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এ লাইব্রেরিতে চোখে পড়ল টিচার্স লাউঞ্জ, টিচার্স মিটিং রুম, স্টুডেন্টস ডিসকাশন রুম, সাইলেন্ট রিডিং রুম, এমফিল ও পিএইচডি স্টুডেন্টস রুম, সার্ভার রুম, জার্নাল সেকশন রুম, ব্রাউজিং সেকশন এবং ক্যাফেটেরিয়া।

লাইব্রেরি অফিস ও অনুষদ অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্পূর্ণ ডিজিটাল এ ই-লাইব্রেরির মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজসহ বিশ্বের ৩৫টি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিশার্সের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।

টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস, সেইজ, ওয়ার্ল্ড সাইন্টিফিক, পিয়ারসন, ডে গ্রুইটার লিস বুকস কালেকশন, মেকগ্র হিল, মাই লাইব্রেরি, অক্সফোর্ড অনলাইন, ক্যামব্রিজের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ তালিকায়। ফলে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা ই-লাইব্রেরি ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জার্নাল ও বইসহ বিশ্বের প্রথম সারির লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়, এমন সব জার্নাল-বইও পড়তে পারবেন।

লাইব্রেরিয়ান ফেরদৌসী বেগম বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকে লাইব্রেরি। শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক সেবা দিতে দুই শিফটে আপাতত ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। এই মাসের ২৩ তারিখ থেকে আরও একজন যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি জানান, এ লাইব্রেরিটি চালু হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১১ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী লাইব্রেরি কার্ড করে ফেলেছে। আরও অনেক আবেদনপত্র জমা পড়েছে।

তবে কেবলমাত্র বাণিজ্য অনুষদের বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এ অনুষদের অধীন পরিচালিত এমফিল ও পিএইচডি গবেষকরাই কেবল এ লাইব্রেরিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন বলে জানান লাইব্রেরিয়ান।

১০ আগস্ট এ লাইব্রেরিটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।

তথ্য-প্রযুক্তির সর্বশেষ সেবায় শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতেই এ লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৫
এসএ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।