ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

‘নিজের সৃজনশীলতার মাধ্যমে সাহিত্য চর্চা করুন’

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৫
‘নিজের সৃজনশীলতার মাধ্যমে সাহিত্য চর্চা করুন’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী ‘চিরকুট সাহিত্য সম্মেলন-২০১৫’ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।

রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) সমাপনী দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. শোয়াইব জিবরান বলেন, বিশ্বসাহিত্য বলতে সাধারণত ইংরেজির মাধ্যমে প্রাপ্ত সাহিত্যকে বোঝায়।

কিন্তু এর বাইরেও অনেক মূল্যবান সাহিত্যের খবর আমরা জানি না, যেগুলো ইংরেজির মাধ্যমে অনুদিত হলে আমরা তাকে বিশ্ব সাহিত্য বলতাম।

‘প্রত্যেক সাহিত্যই কোনো না কোনো আঞ্চলিকতাকে ধারণ করে, কিন্তু সেই সাহিত্যই আবার বিশ্বসাহিত্য হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ভাষার রাজনীতির একটা প্রভাব থাকে। অন্যকে অনুকরণ করে নয়, বরং নিজের সৃজনশীলতার মাধ্যমে সাহিত্য চর্চা করুন। ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে ‘বিশ্বসাহিত্য’ বিষয়ক এ আলোচনায় কবি শামীম রেজার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন গল্পকার ড. খোরশেদ আলম, সাহিত্যিক তপন শাহেদ।

ড. খোরশেদ আলম বলেন, একজন সাহিত্যিকের কাছে কখনোই কোনো দেশ-রাজনীতির সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে না। আমাদের সাহিত্যের অনেক সৃষ্টিই বিশ্ব সাহিত্যে স্থান পেত, কিন্তু বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ না হওয়ার কারণে আমাদের অধিকাংশ সাহিত্য বিশ্ব সাহিত্য হয়ে ওঠেনি।

সাহিত্যিক তপন শাহেদ বলেন, বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে আমাদের পরিচয় মাত্র দুই শতাব্দী আগে নয়, তারো অনেক অনেক আগেই পদ্মাবতী, আলাওলের মত অনেক সাহিত্য বিশ্বসাহিত্যে স্থান পেয়েছিলো। বিশ্বসাহিত্য বোঝার জন্য তুলনামূলক সাহিত্য পাঠ জরুরি। আর এভাবে সাহিত্য বুঝার মাধ্যমেই আমাদের সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে। প্রান্তিকতা একটি সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যে রূপ দেবে না, এমনটি নয়। ইংরেজি, ফরাসি কিংবা বাংলা সাহিত্য প্রত্যেকেই নিজ নিজ এলাকায় প্রান্তিক, আবার সেসব সাহিত্যের মত বাংলা সাহিত্যও বিশ্বসাহিত্য হতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে কবি শামীম রেজা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন করার জন্য চিরকুট পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বসাহিত্য পাঠের একটি চূড়ান্ত পদ্ধতি হলো তুলনামূলক সাহিত্য পাঠ, যা একটি সংস্কৃতির সঙ্গে আরেকটি সংস্কৃতির সংযোগ ঘটায়। এর মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্য বুঝা ও বিশ্বসাহিত্যে নিজেকে অর্ন্তভূক্ত করা সহজ হয়।

পরবর্তীতে আলোচকদের সম্মাননা পদক দেওয়া হয়। এরপর চিরকুট সম্পাদক মাসুম মুনাওয়ার সাহিত্য সংগঠন চিরকুটের ২০১৫-১৬ বর্ষের ১১সদস্যের কার্যনিবার্হী কমিটি ঘোষণা করেন। গল্পকার আনুজুম সানিকে সম্পাদক ও কবি জুলফিকার রবিনকে নিবার্হী সম্পাদক হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী ‘চিরকুট সাহিত্য সম্মেলন-২০১৫’ এর সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এরআগে সকাল ১১টায় অমর একুশের পাদদেশ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার মাধ্যমে তৃতীয় দিনের অধিবেশন শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুন কলা ও মানবিক অনুষদ ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে কবি হিমেল বরকত বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম কোনো সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এমন একটি সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি চিরকুট পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ’

এছাড়াও শোভাযাত্রায় গল্পকার খোরশেদ আলম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, চিরকুট সম্পাদক মাসুম মুনাওয়ার বক্তব্য রাখনে।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই সাহিত্য সম্মেলনে দেশের প্রথিতযশা ও দেশবরেণ্য অর্ধশতাধিক কবি, কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, সমালোচক উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।