ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

‘ক্রাশ প্রোগ্রামে’ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গতি

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপেন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
‘ক্রাশ প্রোগ্রামে’ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গতি

ঢাকা: নয় মাস শিক্ষাবর্ষ ধরে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এগিয়ে নেওয়া কর্মসূচির ফলে গতি এসেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ নামের এই কর্মসূচি ঘোষণার পর যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও নির্ধারিত তারিখে ফলও প্রকাশ হচ্ছে।


 
‘ক্রাশ প্রোগ্রামে’ দীর্ঘ দিনের সেশনজট থেকে মুক্তি পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সব চেয়ে বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। এতে খুশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা।
 
সকালে ক্লাস ও বিকেলে পরীক্ষা গ্রহণের কর্মসূচি নিয়ে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ ঘোষণা দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। লক্ষ্য, ২০১৮ সালের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পুরোপুরি সেশনজট মুক্ত করা।
 
কর্মসূচির পর পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময়ে গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
 
২০১৩ সালের ডিগ্রি পাস কোর্সের পরীক্ষা ১৮ এপ্রিল শুরু করে শেষ হয় ২০ জুন। এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর।
 
২০১৪ সালের অনার্স পার্ট-১ পরীক্ষা ২১ মে শুরু করে শেষ হয় ৬ জুলাই, আগামী ৫ অক্টোবর ফল প্রকাশের কথা রয়েছে এই পরীক্ষার।
 
২০১৪ সালের অনার্স পার্ট-২ পরীক্ষা ২২ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয়েছে গত ২৭ মে। এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত ১ সেপ্টেম্বর।
 
২০১৩ সালের অনার্স পার্ট-৩ এর পরীক্ষা গত ১০ জুন শুরু হয়ে শেষ হয় ৮ জুলাই। এই পরীক্ষার ফল প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
 
২০১৩ সালের অনার্স পার্ট-৩ এবং ২০১৪ সালের অনার্স পার্ট-১ এর ফল চলতি মাসের মধ্যে প্রকাশ হবে বলে জানায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
 
ক্রাশ প্রোগ্রাম অনুযায়ী, ২০১৩ সালের অনার্স পার্ট-৪ পরীক্ষা ১১ জুলাই শুরু করে শেষ হয় ২৭ আগস্ট।
 
এছাড়া ২০১৩ সালের মাস্টার্স পর্ব-১ এর পরীক্ষা ২২ আগস্ট শুরু করে শেষ হয় ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালের মাস্টার্স পর্ব-২ এর পরীক্ষা ২৪ আগস্ট শুরু করে ২৫ অক্টোবর শেষ করার কথা রয়েছে।
 
এলএলবি পর্ব-১ পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু করে ২২ মে শেষ হয়ে ফল প্রকাশিত হয়েছে। এলএলবি পর্ব-২ পরীক্ষা শুরু হবে ৩০ অক্টোবর, শেষ হবে ১২ ডিসেম্বর।
 
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি ধানমন্ডিতে নগর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ জানান, সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় বছর সেশনজট রয়েছে।
 
‘কেন্দ্রীভূত প্রশাসন, গতানুগতিক প্রশাসন পরিচালনা ও পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং হরতালের মত রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে দীর্ঘ দিনে এই সেশনজট তৈরি হয়। ’
 
ক্রাশ প্রোগ্রামে স্নাতকে ২১০ দিন ক্লাস, ফরম পূরণে ১৫ দিন, পরীক্ষা ৫৫ দিন, ফল ৯০ দিন এবং প্রতি ক্লাস ৬০ মিনিট নেওয়ার কথা বলা হয়। পূর্বে যা ছিল ২৪০ দিন, ৩০ দিন, ৭৫ দিন, ১২০ দিন ও প্রতি ক্লাস ৪৫ মিনিট। মাস্টার্সেও এভাবে সময় কমিয়ে আনার কথা বলা হয়।
 
এতে ২০১৭ সালের মধ্যে পুরাতন সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা সেশনজটমুক্ত হতে পারবে। আর ২০১৮ সালের মধ্যে পুরোপুরি সেশনজটমুক্ত হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বদরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ক্রাশ প্রোগ্রাম গ্রহণের পর পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে অনুষ্ঠিত ও ফলাফলও নির্ধারিত দিনে প্রকাশ হয়েছে।
 
তিনি জানান, সকালে ক্লাস নিয়ে বিকালে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের কোনো ক্ষতি না হয়।
 
২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর নিয়মিতভাবে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আশা করি এর মধ্যে সেশনজট শেষ হবে।
 
সেশনজট নিরসনে ক্রাশ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ২০১৫-১৬ সেশনের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়াও এগিয়ে আনা হয়।
 
প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন ১ অক্টোবর শুরু করে ক্লাস ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। এর ফলে ৪ মাস সময় সাশ্রয় হবে।
 
একই প্রক্রিয়ায় আগামী শিক্ষাবর্ষে সম্মান শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া ও ক্লাস শুরুর সময় আরও এগিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
 
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর জানায়, নতুন পরীক্ষা পরিচালনা ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি, ডাকযোগের স্থলে আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি সক্রিয় করে পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ, ওএমআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের হাজিরা, উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে পরীক্ষকরা একটি বিশেষ সফটওয়ারের মাধ্যমে নম্বর কেন্দ্রীয় সার্ভারে পাঠান। এতে পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা ও ফল প্রকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে।
 
ক্রাশ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে শিক্ষকরা কঠোর পরিশ্রম করে সাহায্য করছেন বলে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান। শিক্ষার মানন্নোয়নের পাশাপাশি ২০১৮ সালের মাঝামাঝি বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পুর্ণ সেশনজট মুক্ত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।