ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: সরকারি চাকরির বিধি লঙ্ঘন করে আন্দোলন করায় প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।

বিভিন্ন দাবিতে ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা।



এতে প্রাথমিক শিক্ষাখাতে অস্থিতিশীলতাসহ ক্ষতির শিকার হচ্ছে কোমলমতি লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলনিউজকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীরা বিধি লঙ্ঘন করে এভাবে আন্দোলন করতে পারেন না। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, এই আন্দোলনে পেছন থেকে কেউ কেউ ইন্ধন দিচ্ছে। না বুঝে অনেকেই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ‘গেজেটেড পদমর্যাদা’ বাস্তবায়নের দাবিতে ১ অক্টোবর সারাদেশে চেয়ার বর্জন কর্মসূচি পালন করেন।

প্রধান শিক্ষকদের বসার চেয়ার কালো কাপড়ে ঢেকে ‘গেজেটেড পদমর্যাদা বাস্তবায়নে গড়িমসির প্রতিবাদ’ লেখা প্রর্দশন করে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারাদেশে ৬৩ হাজার ৮৬৫ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (সহকারী শিক্ষক) থাকায় কর্মসূচির বাইরে রয়েছে।
 
সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর‌্যাদা বাস্তবায়ন, জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত, সেলফ ড্রয়িং ক্ষমতা প্রদান, নতুন নিয়োগবিধি অনুসারে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিধান চালু, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুর্নবহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন প্রধান শিক্ষকরা।

৩ থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি ও ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মসূচি রয়েছে তাদের।

এরপরও দাবি না মানলে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ সব দায়িত্ব বর্জনের হুমকি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের চারটি সংগঠন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনও আন্দোলন করে আসছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফোরাম ও
বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ ৪-৮ অক্টোবর সকাল ৯টা-দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি রয়েছে। ১০-১৪ অক্টোবর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।

ফেডারেশনের নেতা শাহিনুর আল আমিন জানান, ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রতিকী অনশন পালন করা হবে।
‘ন্যায্য দাবি’ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের ৬ দফা দাবি হলো- অষ্টম জাতীয় বেতনস্কেলে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে (১২,৫০০ টাকা) পুনঃনির্ধারণ; সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ করে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে নিয়োগ দিয়ে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে মহাপরিচালক পদ পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগ প্রদান;

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন করে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ।

এছাড়াও জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা; টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনঃবহাল করে দ্রুত পদোন্নতি; নন-ভ্যাকেশনাল ডিপার্টমেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অর্জিত ছুটির বিধান প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষাকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।