ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বগুড়ায় হঠাৎ বন্ধ শজিমেক,হল ছেড়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৫
বগুড়ায় হঠাৎ বন্ধ শজিমেক,হল ছেড়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: আধিপত্য বিস্তারে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে হঠাৎ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় মহাবিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৭অক্টোবর) বেলা ১১টায় এই সংঘর্ষের কারণে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক বসে।

সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য শজিমেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে বিকেল ৪টার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে শজিমেক ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা হল ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানা গেছে।   

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে তিনি কোন সংগঠনের নাম উল্লেখ না করে বাংলানিউজকে জানান, ছাত্রদের দু’পক্ষের সংঘর্ষের কারণেই কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ইন্টার্নি চিকিৎসক ডা. আবু আহাদ সিজার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. আতিকুর রহমান আতিকের অনুসারীদের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই কলেজের ক্যান্টিন পরিচালনা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ক্যান্টিনের খাবার মান নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া বিবাধ হয়। পরে রাত ৩টার দিকে লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ক্যান্টিন ছাড়াও হোস্টেলের তিনটি কক্ষ ভাঙচুর এবং মালামাল তছনছ করা হয়।

এদিকে সংঘর্ষের পরপরই সেখানে পুলিশ উপস্থিতি হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে সকালের দিকে পুনরায় দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

নূর আলম সিদ্দিকী, সৃজন রায়, তাওহীদ তুহিন, মাসুদ রানা, তামিমসহ কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান তারা দেশের বিভিন্ন প্রাণ্ত থেকে এখানে লেখাপড়া করতে এসেছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে যা ঘটছে তা তাদের শিক্ষা জীবনকে আশঙ্কার মধ্যে ফেলেছে।
 
তারা জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুইপক্ষের সংঘর্ষের খবর শোনেন। কিছু সময় পর তাদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষণা জানানো হয়। পাশাপাশি হল ছেড়ে যার যার গন্তব্যে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমন আচমকা নির্দেশনা পেয়ে তারা চরম বেকায়দায় পড়েছেন।

বিশেষ করে ছাত্রীদের অবস্থা আরও শোচনীয়। বাড়ি ফেরা নিয়ে তারা ভীষণ চিন্তায় রয়েছেন। হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ জানার পরপরই অনেক ছাত্রী নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন।

কলেজ সংলগ্ন ছিলিমপুর ফাঁড়ি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বাংলানিউজকে জানান, বিকেল সাড়ে ৪টায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তারা হলগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা চলে গেলে কর্তৃপক্ষ হলগুলো তালা মেরে বন্ধ করে দেবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।

 বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।