ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশ

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৫
প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশ

ঢাকা: আন্দোলনের নামে শিক্ষা ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিবেশের উদ্ভব ঘটিয়ে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টার অভিযোগে ‘কতিপয়’ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ‘বিশেষ নির্দেশ’ দিয়েছে সরকার।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার (০৭ অক্টোবর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেওয়া ‘বিশেষ নির্দেশনা’র একটি অনুলিপি বাংলানিউজের হাতে এসেছে।


 
বিশেষ ওই নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর জানান, সাত বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরাধের ধরন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন কর্তন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ চাকরি থেকে অব্যাহতি পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে।
 
মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখা থেকে পাঠানো ‘বিশেষ নির্দেশনা’য় বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেল সংক্রান্ত আর্থিক বিষয়াদিসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতিসহ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে বিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন।
 
‘শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি সরকার সব সময়ই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে দেখে এসেছে এবং আসছে। তারপরও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে শিক্ষকগণ বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম হতে বিরত থেকে এবং পরীক্ষা বর্জনের হুমকি প্রদান করে শিক্ষাক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটিয়ে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে। ’
 
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সরকারের একজন কর্মচারী হিসাবে শিক্ষকদের উপরোক্ত কার্যক্রম সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯ এর পরিপন্থি। এমতাবস্থায় সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি পরিপন্থি এরূপ কাজের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষকদের জেলাভিত্তিক তালিকা প্রস্তুতপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-১৯৮৫ অনুসরণে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
 
বিশেষ এই নির্দেশনার অনুলিপি সাত বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষার উপ-পরিচালক এবং সকল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দেওয়া হয়।
 
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ‘গেজেটেড পদমর্যাদা’ বাস্তবায়নের দাবিতে ১ অক্টোবর সারাদেশে চেয়ার বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।
 
মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) প্রধান শিক্ষকরা কর্মসূচি স্থগিত করে। পরে,  রাত ৯টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করে সহকারী শিক্ষকরা। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

এর আগে, অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে (১২,৫০০ টাকা) পুনর্নির্ধারণসহ ৬ দফা দাবিতে ৪ থেকে ৮ অক্টোবর সকাল ৯টা-দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল তারা।
 
এদিকে, শিক্ষকদের আন্দোলনে প্রাথমিক শিক্ষাখাতের পরিবেশসহ ক্ষতির শিকার হচ্ছে কোমলমতি লাখ লাখ শিক্ষার্থী ‍দাবি করে আন্দোলনকারী এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা রোববার বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
 
তিনি বলেন, জাতীয় বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশের আগে শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক। সরকারি কর্মচারীরা এভাবে আন্দোলন করতে পারেন না।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৫/আপডেটেড:২২৫৮
এমআইএইচ/এমজেএফ/এমজেড
 
** আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।