ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বশেমুরবিপ্রবি’তে মননশীল চর্চায় ‘অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্র’

তন্ময় বিশ্বাস, বশেমুরবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৫
বশেমুরবিপ্রবি’তে মননশীল চর্চায় ‘অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্র’

বশেমুরবিপ্রবি: ‘চিন্তার মুক্তি ঘোচাবে আঁধার’ স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রমাগত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বহুমাত্রিক জ্ঞান অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলসহ আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে অধ্যয়ন কেন্দ্রটি।



২০১৪ সালের মার্চে কেন্দ্রের শুরুর দিকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক কাজী মসিউর রহমান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বহুমাত্রিক জ্ঞান চর্চার গুরুত্ব  তুলে ধরেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মননশীলতা চর্চার জন্যে ভালো মানের বই পাওয়া যেত না। এ ভাবনা থেকে ক্যাম্পাসে একটি বইয়ের সংগ্রহশালা ও অধ্যয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার  উদ্যোগ নেন মসিউর রহমান। প্রথমদিকে অর্থের যোগান না থাকায় তিনি ব্যক্তিগত সংগ্রহের প্রায় অর্ধশত বই দিয়ে কেন্দ্রটি শুরু করেন। তার নিজের বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেন। যুক্ত হন কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরাও।

এর মধ্যে উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হন তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. মো. হানিফ সিদ্দিকী, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার নাথ, ইংরেজি বিভাগের সুকান্ত বিশ্বাস, হাবিবুর রহমানসহ আরও অনেকে।

অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্রে  বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বই সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সদস্যদের মাঝে পাঠ করতে দেওয়া হয়। এ কেন্দ্রে  বইয়ের সংখ্যা বর্তমানে আড়াইশ’ ছাড়িয়েছে।

সংখ্যাটা বাড়ানোর ব্যাপারে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান রোমান বাংলানিউজকে বলেন, কার্যক্রম শুরুর প্রায় এক মাসের মধ্যে সদস্যদের চাঁদায় দুই হাজার টাকার পুরনো বই কেনা হয়। এরপর ২০১৫ সালে বইমেলা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও সদস্যদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে প্রায় বাইশ হাজার টাকার বই কেনা হয়।

শুরুর দিকে অধ্যয়ন কেন্দ্রটির কার্যক্রম ইংরেজি বিভাগ ও কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমান্বয়ে এর জনপ্রিয়তা সব বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগে কেন্দ্রটির সদস্য রয়েছে। পঞ্চাশ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্রের বর্তমান সদস্য সংখ্যা  দুই শতাধিক। আরও প্রসারের জন্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মাহবুবুর রহমান রোমান, মাইনুল হোসাইন সাগর, হারিছুল ইসলাম হালিম ও আব্দুল জব্বার খান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রের পাঠক উজ্জ্বল পোদ্দার ও শশী প্রসাদ শীল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগারে প্রধানত একাডেমিক বই পাওয়া যায়। কিন্তু অনুরণন মননশীলতা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন বিষয়ের বাছাইকৃত বেশ কিছু বইয়ের মাধ্যমে রুচিশীল পাঠকের চাহিদা অনেকাংশে মেটাতে পারছে। পাঠকের চাহিদা বাড়ায় অনুরণনের প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে প্রাধ্যক্ষের প্রচেষ্টায় সম্প্রতি আরও একটি মননশীল পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, অনুরণনের আদলে এলাকার তরুণদের নিয়ে চট্টগ্রামের সন্দীপে একটি পাঠাগার করেছি, সেখানেও পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে আলোকিত মানুষ সৃষ্টির জন্য নিঃসন্দেহে এরকম পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

অনুরণন অধ্যয়ন কেন্দ্রের সদস্য হওয়ার জন্য ১১০ টাকা ফি দিতে হয়। সদস্যদের অর্থায়নে পরিচালিত এ কেন্দ্রের কোনো অফিস রুম না থাকায় বইগুলো ইংরেজি বিভাগের অফিস রুমে রাখা হয়েছে। সপ্তাহে দু’দিন শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বই সংগ্রহ করতে ও ফেরত দিতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৫
আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।