ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

আবিষ্কারের নেশায় সাঙ্গ হলো বর্ণিল মহাকাশ সপ্তাহ

সাইফ সায়েম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
আবিষ্কারের নেশায় সাঙ্গ হলো বর্ণিল মহাকাশ সপ্তাহ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: মহাকাশ কিংবা মহাশূন্য নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। নেই উৎসাহের কোনো ঘাটতি।

গবেষণার মাধ্যমে অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। দূরন্ত মানবের এ ছুটে চলা মানুষের কল্যাণে সুবিধার পরিধিকে আরও বিস্তৃত করার প্রয়াসে।

সমুদ্র-হিমাচল বিজয়ী মানবজাতি যখন পৃথিবীর দিগ্বিদিক জয় করেছে, তখনই মানুষের দৃষ্টি পড়লো ধরাসীমার বাইরে, মহাশূন্যে। সেটা ১৯৫৭ সালের কথা।

ওই বছরের ৪ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘স্পুটনিক-১’ সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে। যা মহাকাশের অভিযানের পথ উন্মুক্ত করে দেয়।

আর ১৯৬৭ সালের ১০ অক্টোবর মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের প্রধান রাষ্ট্রগুলো চুক্তিস্বাক্ষর করে।

এই দুইটি দিনকে স্মরণ করেই ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর ৪ থেকে ১০ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ’।

সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (শাবিপ্রবি)। প্রযুক্তি শিক্ষার এ তীর্থস্থানে প্রতি বছরই ঘটা করে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন করে মহাকাশ ও জ্যোর্তিবিদ্যা বিষয়ক একমাত্র সংগঠন ‘ক্যাম সাস্ট’।

মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি হাতে নেয় ‘ক্যাম সাস্ট’।

৪ অক্টোবর (রোববার) দুপুর ১২টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি শুরু হয়। এবারের মহাকাশ সপ্তাহের মূল থিম ‘আবিষ্কার’কে কেন্দ্র করেই উৎসবের মহাযজ্ঞ।

ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে বর্ণিল ফানুস উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি।

পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে বুথ স্থাপন, সাইকেল র‌্যালি, চিত্র প্রদর্শনী, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, ডকুমেন্টারি শো, বায়োস্কোপ প্রদর্শনীর মাধ্যমে যেন পরিপূর্ণতা লাভ করেছে তাদের এ আয়োজন।

সোমবার ক্যাম্পাসের অর্জুনতলায় উৎসবের টেন্ট এবং চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।

এছাড়া মঙ্গলবার সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে মহাকাশ বিষয়ক চিত্র প্রদর্শনী এবং সন্ধ্যায় তারকা অবলোকনের আয়োজন করা হয়।

উৎসবে মিনি অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় ডকুমেন্টারি শো,যাতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। এসবের পাশাপাশি ছিল চলচ্চিত্র উৎসব।

উৎসবে চিত্র প্রদর্শনী ও বায়োস্কোপের আয়োজন দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থী আরিফ, হেলাল, নূর, মৌসুমী দে আর তামান্না।

উৎসবের শেষ দিনে, শনিবার মিনি অডিটোরিয়ামে মহাকাশ সপ্তাহ উপলক্ষে সেমিনার, পুরষ্কার বিতরণী এবং সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বর্ণাঢ্য এ উৎসবের।

ক্যাম সাস্টের সভাপতি সৈয়দ ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, বিগত পুরো বছর ছিল আবিষ্কার কেন্দ্রিক। সম্প্রতি মহাকাশে নতুন নতুন আবিষ্কার, মঙ্গলে পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাই এবারের উৎসবে মূল থিম নির্ধারণ করা হয় ‘আবিষ্কার’।

বাংলাদেশের মানুষ র্জ্যোতিবিদ্যা আর মহাশূন্য নিয়ে আরও জানুক, এ উদ্দেশ্যেই কাজ করছে ক্যাম সাস্ট। বিশ্ব দরবারে শাবিপ্রবি তথা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে চায় সংগঠনটি।

আয়োজকরা বলছেন, গতবছর বিশ্বে প্রায় ২৩০০ স্থানে মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন হলেও সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ দশম স্থান অর্জন করে। এবার প্রথম হওয়ার লক্ষ্যে ‘ওয়ার্ল্ড স্পেস উইক’ পালন করছে ক্যাম সাস্ট ।

ক্যাম সাস্ট মনে করে, বাংলাদেশিরাও একদিন মহাশূন্যে মহাকাশযান পাঠাবে, পাড়ি দিবে চাঁদে কিংবা মঙ্গলগ্রহে। আর তাতে নেতৃত্ব দেবে শাবিপ্রবির তরুণ তুর্কিরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।