জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত দেশের সবচেয়ে উচু শহীদ মিনারটি ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেছে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার(১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০ থেকে ১টা পর্যন্ত এ পরিষ্কার অভিযান চালায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কেউ ঝাঁড়ু কেউবা পানি দিয়ে শহীদ মিনার ধুয়ে পরিষ্কার করছেন। কেউ ব্যস্ত রয়েছেন শহীদ মিনারে লাগানো বিভিন্ন স্টিকার তুলতে। অনেকটা আনন্দের সঙ্গেই কাজ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
চারুকলা বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল হোসেন রাজা বলেন, আমরা কারণে অকারণে শহীদ মিনার অপরিষ্কার করি। তাই আমরা বিজয়ের মাসে শহীদদের প্রতি সম্মান রেখে স্ব-উদ্যোগী হয়ে শহীদ মিনার পরিষ্কার করছি।
শিক্ষার্থী বিক্রম রায় বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি স্থাপনা আছে। নান্দনিক এই স্থাপনাগুলো আমাদের বাংলার ভাষা, শিল্প, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি, এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, মাটি ও মানুষ এবং স্বাধিকার, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রতীক বহন করে।
কিন্তু আমাদের অবহেলার কারণে ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০
এবং ১৯৭১ সালের সংগ্রামের ধারাবাহিক ইতিহাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় নির্দ্বিধায় আমরা বেদির উপর জুতা পায়ে উঠি। খাবার ও বাদামের খোসা ফেলে শহীদ মিনারকে অপরিষ্কার করি। যা শহীদদের অবমাননার সামিল। তাই তাদের সম্মানার্থে আমরা শহীদ মিনার পরিষ্কার করছি।
চারুকলা বিভাগের সভাপতি এম.এম ময়েজউদ্দিন বলেন, অপরিস্কার থাকার কারণে এই
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনাগুলো সৌন্দর্য হারাচ্ছে। স্থাপনাগুলো পরিষ্কার রাখতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তাদের দিয়েই শহীদ মিনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগগুলোর উচিত শিক্ষার্থীদের এই ধরণের কাজগুলোতে আগ্রহী করে তোলা।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, তোমাদের এই উদ্যোগ আসলেই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। এভাবে আমরা যদি নিয়মিত শহীদ মিনার পরিষ্কার রাখি তাহলে একদিকে যেমন শহীদদের প্রতি সম্মান দেখানো হবে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশও অক্ষুন্ন থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৫
আরআই