খুলনা: প্রচলিত চাকরির বাইরে অনেকেই চান মুক্তভাবে কাজ করতে। মুক্তভাবে কাজ করার ব্যতিক্রম এ পেশাটির নাম হল ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing)।
সম্প্রতি অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রটা বেশ সম্প্রসারিত হয়েছে। দেশের বহু তরুণ ও পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তারা ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ঝুঁকছেন। দিন দিন কেবল এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। আর এ ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করতে খুলনা আইটি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে। যেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকে ঘরে বসে মুক্তভাবে চাকরি করছেন।
![](files/khulna_it_1_912147835.jpg)
রোববার (২৪ জানুয়ারি) বাংলানিউজকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা জানান খুলনা আইটি’র অধ্যক্ষ শিলাদিত্য গাইন। নগরীর বড় মির্জাপুর রোডে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ সাক্ষাতকার দেন তিনি।
![](files/khulna_it_2_871727985.jpg)
আইটি খাতে কী ধরনের চাকরির সুযোগ আছে জানতে চাইলে খুলনা আইটি’র অধ্যক্ষ বলেন, কোম্পানির বিভিন্ন প্রকারভেদ অনুযায়ী গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েবডিজাইন, ই-মেইল মার্কেটিং, অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি কাজ করে থাকে। এক এক কোম্পানিতে এক এক ধরনের কাজ হয়ে থাকে। কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী মালিক এসব কাজে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের নিয়োগ দেন।
![](files/khulna_it_3_758356210.jpg)
কতোটুকু শিক্ষায় শিক্ষিত হলে আইটি শিক্ষা নেওয়া যায় এমন প্রশ্নের জবাবে শিলাদিত্য গাইন বলেন, ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সবচেয়ে বেশি যা লাগে তা হল ইচ্ছা।
ভাষাগত দক্ষতা এবং পড়তে পারা। সব কিছু বোঝার ক্ষমতা। মূলত অনলাইনে যে সকল কাজ করা হয় সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সেখানে কাজের দক্ষতার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
![](files/khulna_it_4_595606572.jpg)
তিনি জানান, খুলনা আইটি থেকে প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং/ আউটসোর্সিং এবং জেনারেল ট্রেনিং করানো হয়।
খরচ সম্পর্কে তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সিং এ আমরা ৭টি কাজ শিখাই। পেমেন্ট আনার পদ্ধতিসহ নিজের কাছে টাকা আনা পর্যন্ত সব কিছু পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়াও কাজ শেখানোর পর লাইফ টাইম সাপোর্ট তো সঙ্গে থাকছেই। অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যারা অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স করে সরকারি সনদপত্র চান। এরপর তারা ওই সনদপত্র দিয়ে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এজন্য আউটসোর্সিং এর পাশাপাশি অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স চালু করা হয়েছে, যার ফি তিন হাজার টাকা। আর এ প্রশিক্ষণ শেষে কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই ঘরে বসেই বড় বড় কোম্পানিতে চাকরি করছেন।
![](files/khulna_it_5_206686266.jpg)
খুলনা আইটি’র বিশেষত্ব কি জানতে চাইলে শিলাদিত্য গাইন বলেন, বিভিন্ন সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৮-১৯ সাল নাগাদ শিক্ষার্থীদের হাতে কোনো বই থাকবে না। তার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেওয়া হবে এবং সে লক্ষ্যে সরকার প্রথমে শিক্ষকদের কম্পিউটারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের ব্যবস্থা করছে। আমরা খুলনা আইটি সরকারের এ লক্ষ্যকে স্বাগত জানিয়ে কীভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া যায়, তা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছি যেটা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করা হবে। এ পদ্ধতিতে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া যাবে এবং সম্পূর্ণ পরীক্ষাটি কম্পিউটারের মাধ্যমে হবে।
![](files/khulna_it_6_276895637.jpg)
এ কাজের জন্য সরকারের কাছে কী ধরনের সহযোগিতা আশা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে খুলনা আইটি’র অধ্যক্ষ বলেন, আমরা যারা এ পেশার সঙ্গে যুক্ত আছি, তাদের সকলের দাবি, পেপাল পেমেন্ট মেথড বাংলাদেশে চালু করা হোক। এটি নিয়ে অবশ্য তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে পেপাল প্রতিনিধিদের অফিসিয়াল সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে তারা আশ্বস্ত করেছেন, তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে পেপাল চালু করবেন। ইন্টারনেট চার্জটা একটু কম হলে ভালো হয়। আর সহজ শর্তে ব্যাংকঋণের ব্যবস্থা করা, যাতে আরও নতুন নতুন ই-কমার্স ব্যবসা, অনলাইন ব্যবসা আর নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়।
![](files/khulna_it_7_239479720.jpg)
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এগোচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং বাংলাদেশে নতুন মার্কেটপ্লেস তৈরিতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এজন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর