ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গৌরবের ২৫ বছর পেরিয়ে শাবিপ্রবি

সাইফ সায়েম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
গৌরবের ২৫ বছর পেরিয়ে শাবিপ্রবি

শাবিপ্রবি: প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পেরিয়ে ২৬ এ পদার্পণ করলো সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। ১৯৮৬ সালের ২৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯১ সালের ১ ফাল্গুন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে।



উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূইয়ার নেতৃত্বে প্রতিবছরের মতো জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আনন্দ মিছিল, কেককাটার মধ্য দিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি (১লা ফাল্গুন, শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।

১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও অর্থনীতি বিভাগের ১৩ জন শিক্ষক ও ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৩২০ একর জায়গা জুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে ২৬টি বিভাগ, পাঁচ শতাধিক শিক্ষক এবং প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

পাহাড় আর অরণ্যঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃতি প্রেমীদের বিমোহিত করে। বৃক্ষশোভিত দীর্ঘ এক কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে কৃত্রিম জলাশয়, গোলচত্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার কিংবা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দর্শনার্থীদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে।

দীর্ঘ ২৫ বছরের পথচলায় শাবিপ্রবি প্রযুক্তি ও গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা, ট্র্যাকিং ডিভাইস, ড্রোন, মিলিটারি ড্রোন, হেক্সা ও অক্টোকপ্টার, ইন্টিলিজেন্ট লেজার কন্ট্রোলার, মুঠোফোনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু, ই-পেমেন্ট, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট (আইআইসিটি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশবাসীকে দিয়েছে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিত্যনতুন চমক।

২০১১ সালে শাবিপ্রবির একমাত্র গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এ গবেষণা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে গবেষণা খাতে অর্জিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

স্বল্প ব্যয়ে কৃত্রিম হীরা আবিষ্কার, সূর্যের আলোয় পানি শোধন পদ্ধতি আবিষ্কার, কৃত্রিম ফুসফুস আবিষ্কার, জ্বালানি সংকট, নবায়নযোগ্য শক্তি, ইলেক্ট্রো কেমেস্ট্রি, ক্যাটালাইসিস, পেট্রোলিয়াম, ট্রেড সিস্টেম, মাইক্রো ইকোনমি, ম্যাক্রো ইকোনমি, সিলেটের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, রেমিট্যান্স, নগরায়নের সমস্যা, নগর উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে গবেষণায় সাফল্য পেয়েছে শাবিপ্রবি।

গবেষণা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা ইউনেস্কো পদক, প্রধানমন্ত্রী পদক, ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড, ফ্রান্সভিত্তিক সায়েন্সেস ফোরাম বায়োভিশনের ফেলোশিপ এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি কর্তৃক স্বর্ণপদক অর্জন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

এছাড়া জাতীয় বিতর্ক উৎসব, গণিত অলিম্পিয়াড, রসায়ন, পদার্থ ও জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, নিউক্লিয়ার অলিম্পিয়াড, রোবোটিকস প্রতিযোগিতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

এছাড়া বিশ্ব প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ, আন্তর্জাতিক রোবোটিকস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ, গুগল, মাইক্রোসফট, নাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

তবে এতো অর্জনের পরও শাবিপ্রবিতে সমস্যার অন্ত নেই। আবাসন সংকট, পরিবহন সংকট, ওয়াই-ফাই বিড়ম্বনা, সেশনজট, মানসম্মত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকট, নিরাপত্তা সমস্যা, ক্লাসরুম সংকটসহ প্রতিনিয়ত নানা সমস্যা মোকাবেলা করছে শাবিপ্রবি।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এলাকার সংস্কৃতির উন্নয়ন হয়েছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্বমানের হয়ে ওঠে আমরা তাই দেখতে চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।