জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র চারজন। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না শিক্ষকের সংখ্যা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দু’বার শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিলেও নিয়োগ হয়নি। এতে সেশন জটসহ শিক্ষাজীবন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে ২১ ডিসেম্বর জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ ৬২ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এরই মধ্যে চারটি ব্যাচ যুক্ত হলেও এখনো সেই চারজন শিক্ষক দিয়েই চলছে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি সেশনে (২০১৫-১৬) আরো একটি ব্যাচ যুক্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে না। এ পর্যন্ত দুই বার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার তাগাদা দিলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে কয়েকবার সাক্ষাৎ করেন। উপাচার্য এক মাসের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিলেও নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন বিভাগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকার পরও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জার্নালিজম বিভাগে শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।
শিক্ষক সংকটে ঠিকমত নেওয়া হয় না ক্লাস। এক শিক্ষাবর্ষের ৪ থেকে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও কয়েকটি ব্যাচের দুই থেকে তিনটি কোর্সের ক্লাস শুরু করা হয়নি। ফলে সঠিক সময়ে পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বিকাশ সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কয়েকমাস পার হয়ে গেলেও এখনো দুইটি কোর্সের ক্লাস শুরু হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে সেশনজটে পড়তে হবে।
৪৩তম ব্যাচের ছাত্রী জান্নাত খাতুন বলেন, শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষক অত্যন্ত কম। ফলে শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নিয়েও সময়মতো কোর্স শেষ করতে পারছেন না। যার কারণে আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
এ বিষয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আদনান ফাহাদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর বাড়ছে শিক্ষার্থীরা সংখ্যা। প্রায় পাঁচবছর হয়ে গেলেও কোন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যাচে ৭ থেকে ১০টি কোর্স থাকে। প্রত্যেক ব্যাচে আমাদের ক্লাস নিতে হচ্ছে। একজন শিক্ষককে প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যাচের ৬ থেকে ৭টি কোর্স নিতে হয়। এতে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা পাচ্ছেন না।
কলা ও মানবিক অনুষদের ডীন এবং জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার বলা হলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
আরইউ/জেডএম