ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

কার্যক্রম স্থগিত ৫ মেরিন একাডেমির, বন্ধের পথে আরো কয়েকটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৬
কার্যক্রম স্থগিত ৫ মেরিন একাডেমির, বন্ধের পথে আরো কয়েকটি

ঢাকা: ‘বোঝার ওপর শাকের আঁটি’- প্রবাদ বাক্যেরই যেন প্রতিফলন ঘটছে দেশের মেরিন শিক্ষাখাতে। দেশের সরকারি-বেসরকারি ১৯টি মেরিন একাডেমি যখন চলতি বছরে সব মিলিয়ে ১০০ জন শিক্ষার্থীও পায়নি, তখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধরা পড়ছে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতিও।

পরিদর্শন করে এসব ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রমাণ পেয়ে ৫টি বেসরকারি মেরিন একাডেমির কার্যক্রম সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর। কার্যক্রম স্থগিত রাখা মেরিন একাডেমিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি হচ্ছে- বে মেরিন একাডেমি, মিস্ট মেরিন একাডেমি ও ম্যাস মেরিন একাডেমি। পুরো পরিদর্শন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর এ তালিকা আরো দীর্ঘ হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর সূত্র।

সূত্রটি বাংলানিউজকে জানায়, পাঁচটি বেসরকারি মেরিন একাডেমিকে সম্প্রতি বিএসসি থেকে চিঠি দিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য কার্যক্রম বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

গত প্রায় এক বছর আগে বেসরকারি মেরিন একাডেমিগুলোতে বিএসসি’র এ পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৯টি বেসরকারি মেরিন একাডেমিতে পরিদর্শন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। কোনোটির কার্যক্রমেই সন্তুষ্ট নন পরিদর্শকরা। এর মধ্যে পাঁচটি বেসরকারি মেরিন একাডেমিকে চিঠি দিয়ে কার্যক্রম সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর’র মহাপরিচালক কমোডর এইচ আর ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ত্রুটি থাকার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখনও চলছে পরিদর্শন কার্যক্রম।

তিনি জানান, মেরিন একাডেমিগুলোকে ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হচ্ছে। ১৮টি বেসরকারি মেরিন একাডেমিকে লাইসেন্স দেওয়া হলেও মাত্র ১টি মেরিন একাডেমি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছে। দুটি রয়েছে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। বাকিদের অবস্থাও ততোটা ভালো না। এ খাতের উন্নতির স্বার্থেই আমরা নানা উদ্যোগ নিচ্ছি।
 
এদিকে চলতি বছর বেশিরভাগ মেরিন একাডেমিই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। মুখ থুবড়ে পড়ছে শিক্ষার এই খাতটি। শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছে বেসরকারি ইউনাইটেড মেরিটাইম একাডেমিসহ প্রায় ১০টি মেরিন একাডেমি।  
 
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ইউনাইটেড মেরিটাইম একাডেমির ডেপুটি কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রথম দিকে দেশের মেরিন শিক্ষার অবস্থা ভালো ছিলো। আমাদের মেরিনারদের চাহিদাও রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। কিন্তু নানা অপপ্রচারে আমাদের ক্যাডেটদের এখন চাকরি পেতে সমস্যা হচ্ছে। বেসরকারি মেরিন একাডেমিগুলো তাদের ক্যাডেটদের নিজেরাই চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু এখন নানা প্রতিবন্ধকতায় ক্যাডেটদের জাহাজে পাঠাতে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই আপাতত চলতি বছরে আমরা শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছি’।
 
দেশের এই শিক্ষা খাতটিকে বাঁচাতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করছেন শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস একাডেমির ব্যবস্থাপনা পরিচালন শাহ্ মমিনুল ইসলাম চৌধুরী।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের শিক্ষা খাতে বেসরকারি মেরিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বয়স এক দশকও হয়নি। এ সময়কালের মধ্যে এতো প্রতিবন্ধকতায় সংশ্লিষ্ট অনেকেই এ খাতটি থেকে সরে দাঁড়াতে চাচ্ছেন। সরকারের এ বিষয়ে নজর দেয়া উচিত। কারণ, মেরিন ক্যাডেটদের চাকরির বেশিরভাগই হয় বিদেশি জাহাজে। ফলে দেশে রেমিটেন্স আসে। আমরা মেরিন ক্যাডেট তৈরি করতে পারলে বহির্বিশ্বে আমাদের নাম ডাক যেমন বাড়বে, ঠিক তেমনি রেমিটেন্সও আসবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৬
ইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।