ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

নির্দেশের পরও প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৬
নির্দেশের পরও প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

ঢাকা: চার বছর আগের রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি করা প্যানেল থেকে সব সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পাবেন কিনা- তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সরকার।
 
উচ্চ আদালত প্যানেল শিক্ষকদের সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূন্যপদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে বলেন।


 
কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষক শূন্য পদগুলোতে নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন না।
 
সরকারি নির্দেশের পরও প্যানেলভুক্ত শিক্ষকরা নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে প্রার্থীদের মাঝে।
 
প্যানেলভুক্ত শিক্ষকরা বলছেন, সরকারের নির্দেশে নিয়োগ হলে আদালতে রিটকারীর বাইরেও অনেকে নিয়োগ পাবেন। এতে রিটকারী এবং আন্দোলনকারী সব শিক্ষকের নিয়োগের সুযোগ থাকবে না।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান নিজ দপ্তরে বুধবার (০৮ জুন) বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সদ্য জাতীয়রকণকৃত বিদ্যালয়ে কেবল শূন্যপদের বিপরীতে সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
 
‘যতগুলো পদ শূন্য আছে ততোগুলো পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, এর বাইরে আমাদের কিছু করার নেই। ’
 
নব্যসৃষ্ট পঞ্চম পদে নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আগাম কিছু বলছি না।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ৬ জুন ৬১ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে থানা/উপজেলা মেধার ভিত্তিতে শূন্য পদে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
 
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, উপজেলা বা থানায় যে কয়টি পদ শূন্য আছে সেগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
 
মেধার ভিত্তিতে শূন্যপদে নিয়োগ হলেও প্যানেলভুক্ত সবাই নিয়োগ পাবেন না বলে জানান মো. আলমগীর।
 
সৃষ্ট পঞ্চম পদে আপাতত তাদের নিয়োগ করা হচ্ছে না বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
 
প্যানেল শিক্ষক ঐক্যজোটের সভাপতি রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সারাদেশে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার।
 
তিনি বলেন, জাতীয়করণকৃত ২৬ হাজার বিদ্যালয়ে পাঁচ হাজারের বেশি নিয়োগ সম্ভব হবে না।
 
দীর্ঘদিন আন্দোলন এবং উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে আসা শিক্ষকরা সবাই নিয়োগ না পেলে আবারও রাজপথে নামার হুমকি আসছে শিক্ষকদের পক্ষে।    
 
এর আগে প্রথমবার ১৮ মে রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে নিয়োগ প্রদানের বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হলেও বর্তমানে রেজিস্ট্রার্ড স্কুল না থাকায় জটিলতা তৈরি হয়। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়।
 
পরবর্তীতে গত ২ জুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি স্পস্ট করে ‘সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে অধিদপ্তরকে চিঠি পাঠায়।
 
এরপরই ৬ জুন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দেয়।
 
রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি (নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা ও কল্যাণ) নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
 
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১ জনের একটি প্যানেল প্রস্তুত করা হয়। উক্ত প্যানেল থেকে এর মধ্যে ১০ হাজার ৫১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঝুলে থাকার মধ্যে তা নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যান প্রার্থীরা।
 
পরে এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উচ্চ আদালত রিট পিটিশন ও রিভিউ পিটিশন খারিজ করে নীতিমালা তৈরি করে নিয়োগ দিতে বলায় নিয়োগ উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।
 
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর সেই প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।
 
এর আগে আইনি লড়াইয়ে নওগাঁও ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে সাত জন যোগদান করেন।

**প্যানেল শিক্ষকদের ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ
 
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।