ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য হলো এসএসসির বই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য হলো এসএসসির বই পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য হলো এসএসসির বই

ঢাকা: মাধ্যমিক স্তরের নবম-দশম শ্রেণির ১১টি পাঠবই পরিমার্জন করে প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করে ছয়টি বই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিজ্ঞানের ছয়টি বই শিক্ষামন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
 
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।


 
নবম-দশম শ্রেণির ১২টি পাঠ্যবই আরো পাঠযোগ্য, আকর্ষণীয় ও সহজ করতে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই কমিটি এরআগে বাংলা সাহিত্য, ইংলিশ ফর টুডে, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশ ও বিশ্ব সভ্যতা এবং অর্থনীতির পরিমার্জিত বই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়।
 
মঙ্গলবার গণিত, উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞানের পরিমার্জিত বই হস্তান্তর করা হয়েছে। আর হিসাববিজ্ঞানে বই শিগগিরই পাওয়া যাবে বলে কমিটি জানায়।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা মাধ্যমিকের ১২টি বই তৈরি করছি। ইতোমধ্যে পাঁচটি বই পেয়েছি। আজকে পাচ্ছি ছয়টি। হিসাববিজ্ঞান বইটি বাকি আছে। বইগুলো চমৎকার, সুখপাঠ্য হয়েছে। আমরা বইগুলো ছাপিয়ে আগামী বছর শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেব।
 
শিক্ষার মান নিয়ে কথা উঠছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বই পরিমার্জনের মাধ্যমে এভাবে মানের প্রভাব সৃষ্টি করবে। চাক্ষুস মান হবে, মান দৃশ্যমান হবে। বইয়ের মানের উন্নয়নে ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি সবখানেই মান বাড়বে।
 
পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিকের অন্যান্য শ্রেণির বইগুলোও পরিমার্জন করে উন্নয়ন করা হবে বলে জানান নাহিদ।
 
শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, আমরা চাই আমাদের শিক্ষার যে গুণগত মান সেটি যাতে উন্নত হয়, যাতে আমাদের এই প্রজন্ম তারা সারা বিশ্বে জ্ঞান দিয়ে, সততা দিয়ে, আদর্শ দিয়ে প্রতিযোগিতা করে উপরের দিকে থাকতে পারে। আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধাবি। অনেক সময় প্রশ্ন আসে ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে। ভর্তি পরীক্ষা পাস-ফেলের বিষয় নয়। নির্ধারিত সিটের বিপরীতে যারা ভালো করবেন তারা ভর্তি হবেন। নির্ধারিত সিলেবাসের বাইরে যদি প্রশ্ন করেন তাহলে তো শিক্ষার্থীরা উত্তর দিতে পারবে না।
 
অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, শিক্ষার মান উন্নত করতে চাইলে খুব ভালো মানের পাঠ্যপুস্তক করতে হবে। ভালোমানের পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হলে অবশ্যই শিক্ষার মান ভালো হবে।
 
সাহস করে বিজ্ঞানের ছয়টি বই পরিমার্জনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, এখন বইগুলো যারা ছাপাবে তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া যাবে। পেজ মেকিং কিংবা আর কিচ্ছু করতে হবে না।
 
তিনি বলেন, বইগুলো করতে আমাদের কিছু অনুরোধ ছিল যেন রঙিন হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে, এজন্য হয়তো তাদের কিছু বেশি ফান্ড লেগেছে।
 
বিজ্ঞানের কিছু বিষয় ব্যাখ্যা করতে বেশি কিছু জায়গা দিতে হয়েছে সেজন্য বইয়ে আকার বড় হতে পারে উল্লেখ করে জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের সেই স্বাধীনতা দিয়েছে।
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা ছেলে বা একটা মেয়ে বইটা হাতে নিলে তার মনটা ভালো হয়ে যায় যে, আহ কী সুন্দর বই। এটা আমার সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল। আমার স্বপ্নটা নিজে নিজে করতে পারতাম না যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাধীনতাটা না দিতো।  
 
‘প্রফেসর কায়কোবাদ ও আমি দেশের তরুণ প্রজন্ম এবং সব চেয়ে ভালো শিল্পী, সব চেয়ে ভালো যে গ্রাফিক্স জানে, সব চেয়ে ভালো যে প্রযুক্তিবিদ তাদের নিয়ে আমরা বইগুলো লিখেছি’।
 
জাফর ইকবাল বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি যাতে বইগুলো নির্ভুল হয়। হাতে তুলে দিলে তাদের মনটা ভালো হয়ে যায় তাহলে আমাদের পরিশ্রমটা স্বার্থক হয়েছে। আমরা পরিশ্রমের কোনো ঘাটতি করিনি। গত ১০ মাস আমি কোনো দিন রাত ২টার আগে ঘুমাইনি।
 
ইউনিকোড ফন্টে বইগুলো ছাপানোর নিজস্ব একটি ফন্ট দুই সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।