বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ (২৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরবর্তী সিন্ডিকেটে এটি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে সিন্ডিকেট-সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলেও বিষয়টি সিন্ডিকেটে তোলা হয়নি। ২৬ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বৈঠকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের কাছে দাবি জানানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সিন্ডিকেটে ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
সিন্ডিকেটের একজন সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাইব্যুনালে কারা থাকবেন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সামনের সিন্ডিকেটে উপাচার্য একটি প্যানেল ঠিক করে দেবেন। সেখানে সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্যরা থাকবেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বিচার করা হবে। ট্রাইব্যুনালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেউ থাকবেন না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ইতিহাস বিকৃতির বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি স্মরণিকার ১৯ নং পৃষ্ঠায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ রেজাউর রহমান ‘স্মৃতি অম্লান’ নামে একটি নিবন্ধ লেখেন।
সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দেন। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জেনারেল জিয়াকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন।
পক্ষান্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখা হয় বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা, যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত।
ছাত্রলীগের কর্মীরা ঐতিহাসিক তথ্যের এহেন বিকৃতির প্রতিবাদে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের গাড়ি ভাঙচুর ও তাকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে। উপাচার্য ওই স্মরণিকাকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি এহেন কর্মের জন্য রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। তিনি তার আগের দায়িত্ব টিএসসির ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরে ফিরে যান। তিনি বিএনপি আমলে উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়া অধ্যাপক এসএম ফায়েজের সময়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে আসেন।
এ বিষয়ে জানতে সৈয়দ রেজাউর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ঘটনার তদন্তের জন্য ২০১৬ সালের ২১ জুলাই সিন্ডিকেটের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, খাদ্য ও পুষ্টি ইনিস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমা শাহীন, সিনেট সদস্য বাহালুল মজনুন চুন্নু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৭/আপডেট ২০৪৮ ঘণ্টা
এসকেবি/জেএম