ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবর্তনে যোগ দিতে প্রাণের ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ হাজার গ্রাজুয়েট। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অঙ্গন।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করবেন। তার আগমনকে ঘিরে এরই মধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রধান প্রধান সড়কে বসানো হয়েছে ২০টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসি ক্যামেরা ।
একইভাবে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী গ্রাজুয়েটদের স্বাগত জানাতে নবসাজে সজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একর এলাকা। রাতের আলো-আঁধারিতে অনেকটা অচেনাও হয়ে উঠেছে চেনা ক্যাম্পাস। বর্ণিল আলোর ঝলকানি আর সর্পিল সব রেখা ভেসে বেড়াচ্ছে কাছে-দূরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, ফোয়ারা, মুক্তবাংলা, বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলসহ চারদিকে লাল, নীল, হলুদ, সাদা আর সবুজ রংঙের ঝলমলে আলোর ডালি মোহাবিষ্ট করেছে রাতের ক্যাম্পাসকে।
সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে আসা গ্রাজুয়েট রাসেদুল ইসলাম অনু, আকতারুজ্জামান, মামুন, কনা, জান্নাত বাংলানিউজকে বলেন, জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলো এখানে কাটিয়েছি। ক্যাম্পাসে ফিরে অনেক বছর পরে আবার মনে হচ্ছে সেই সময়ে ফিরে এসেছি। সবার সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, গল্প-- সবকিছুই আলাদা। আর সমাবর্তনে ক্যাম্পাসের সাজ-গোজ দেখে মনে হচ্ছে, সারারাত বাইরে ঘুরে বেড়াই।
সমাবর্তনে আবাসন উপ-কমিটির দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পদচারণায় পুরো ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে উঠেছে। তাদের পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। একইভাবে দূর-দূরান্ত থেকে আগত অতিথিদের যেন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি।
আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা উপ-কমিটির দায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আগমন উপলক্ষে তার বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছে। তারাসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালের ২৭ এপ্রিল। ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন। এর তিন বছর পর ২০০২ সালের ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় ও সর্বশেষ সমাবর্তন।
এর মাঝে লম্বা বিরতির পর দীর্ঘ দেড় যুগ পর রোববার অনুষ্ঠিত হচ্ছে চতুর্থ সমাবর্তন। এজন্যই অন্যান্য সমাবর্তনের তুলনায় এবারের আয়োজনে রয়েছে অনেক বাড়তি মাত্রা।
সমাবর্তনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
সমাবর্তনের সামগ্রিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বাংলানিউজকে বলেন, চতুর্থ সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দায়িত্বরত সব উপ-কমিটির সদস্যরা তাদের কাজ সম্পন্ন করেছে। আশা করছি খুব সুন্দরভাবে আমরা চতুর্থ সমাবর্তন সম্পন্ন করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
এসআইজে/এসআইএস/এইচএ/