বৃহস্পতিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের প্রশ্নে মন্ত্রী একথা বলেন।
প্রধান শিক্ষকদের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়ে বেতন বৃদ্ধি হওয়ার পরে সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্য নিরসনে আন্দোলন করে আসছিলেন।
বেতন বৈষম্য দূর করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, অনশন যখন শিক্ষকরা করেন তখন প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে তারা কোনো দাবি করেননি। তারা দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
‘প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক সবাই তৃতীয় শ্রেণিতে ছিল, এখন প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির মধ্যে বেতন কতোটা হলে বৈষম্য থাকবে না সেই যুক্তিটা সরকারের কাছে। ’
মন্ত্রী বলেন, দাবি যৌক্তিক হলে সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে, বাস্তবায়ন করার ব্যাপারটা তাদের। প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী যদি বলে দেয় তাহলে এটা হবে না। আমি কিন্তু কোনো স্কুল জাতীয়করণ করে দিতে পারি না। সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন এটা হবে। তবে এটা পরিত্যক্ত হয়নি, তাদের দাবি প্রত্যাখ্যানও হয়নি। তাদের বিষয়টি যুক্তিযুক্তভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। সরকারের আরও তৃতীয় শ্রেণিতে অন্য যারা আছে, সমস্ত কিছু মিলে বিবেচনায় আছে।
‘নির্বাচন আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে হবে, এটা নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন আমি মনে করি তারাও বুঝবেন আওয়ামী লীগ সরকারই কেবল শিক্ষার জন্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, সম্মান বৃদ্ধি করেছেন। আমি এও মনে করি, তাদের আশ্বস্ত থাকা দরকার, এই সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলেই বরং তাদের আশাটা পূর্ণ হতে পারে। উনারা কী মনে করবেন সেটা তাদের…, আমি আহ্বান জানাবো হটকারি কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাদের অপেক্ষা করা দরকার। ’
প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেটা ব্রিটিশ করেনি, পাকিস্তান করেনি সেটা জাতীয়করণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর এখন জননেত্রী শেখ হাসিনা করছেন। শিক্ষকদের ভরসা রাখা দরকার। আশা করি এর একটা যৌক্তিক সমাধান হবে।
‘আমরা তো চাই, আমাদের শিক্ষকরা…, পৃথিবীর অন্য দেশের মতো আমরা মর্যাদা কিংবা তাদের সম্মানী দিতে পারি না। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে তাদের যে বেতন সেটা ইউনিভার্সিটির স্ট্রাকচারের মতো। কিন্তু আমরা আমাদের অর্থনীতিটা এই পর্যন্ত আনতে পারিনি। ’
শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাটাই হলো ভিত্তিমূল, এই জায়গাটায় সমস্ত মনোনিবেশ। ইউনিভার্সিটির ছাত্রকে পড়ানো আর প্রাইমারির ছাত্রকে পড়ানো আমি মনে করি অনেক তফাৎ। অবুঝ শিশুকে এনে যে শিক্ষকরা লাইনে দাঁড় করান, নিশ্চয়ই তাদের সম্মানী, তাদের আরও কোনো কিছু, তাদের সুযোগ-সুবিধা ভালোভাবে বৃদ্ধি হওয়া দরকার।
এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে আছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিশুকে অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক হিসেবে গণ্য করা। এটা এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে প্রসেস চলছে, এটা আমরা পাবো। আমরা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চালাচ্ছি। আমাদের ৭০০ স্কুলে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণি খুলেছি।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী আর কতোদিন চলবে? প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, যতোদিন সরকার এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখবে ততোদিনই চলবে। প্রাথমিক শিক্ষা যদি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের কাছে আসে, দু’টো মিলে একটা হোক এ প্রস্তাব আমরা পাঠিয়েছি। যেহেতু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়নি এবং অষ্টম পর্যন্ত এখনও প্রাথমিকের আওতায় আসেনি, কাজেই এখন যে পদ্ধতি আছে সেটাই বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮
এমআইএইচ/টিএ