পরীক্ষা কেন্দ্রে রোল নম্বর থাকলেও এসব ছাত্রীরা অনুপস্থিত ছিলেন। এসব ছাত্রীদের ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহবাজার এ এইচ ফাজিল মাদ্রসা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিলো।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া এমনই ছাত্রীর মধ্যে রয়েছে, মুছুল্লীপাড়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার আফিনা, মৌসুমী, হাসনা। ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শাহিনা, শাহনাজ পারভীন। বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রুজিনা, সেলিনা, মোকছিদা খাতুন। দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আতিকা খাতুন।
কুড়িগ্রামের ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা ফুলবাড়ী উপজেলায় বাল্যবিয়ে রোধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণাসহ কঠোর পদক্ষেপ নিলেও পরীক্ষায় অনুপস্থিতিতে প্রতিয়মান থামছে না বাল্যবিয়ে।
শুধুমাত্র বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গত ৬ মাসে ৩৩ জন শিশু শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে বিদ্যালয় সূত্রে।
ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামের জাবেদ আলী, কুরুষা ফেরুষা গ্রামের খলিলুর রহমান, পূর্ব-ফুলমতি গ্রামের মোকলেছ আলী বাংলানিউজকে জানান, তাদের মেয়ে জেএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। কিন্তু ভালো পাত্র পাওয়ায় বিয়ে দিয়েছেন।
ফুলবাড়ী জছিমিঞা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব আবেদ আলী খন্দকার জানান, তার কেন্দ্রে ৪৬ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।
শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, এবারের জেএসসি পরীক্ষায় তাদের কেন্দ্রে ২১ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম জানান, চলতি জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় উপজেলার চারটি কেন্দ্রে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। এদের মধ্যে ৯৯ জন বালিকা এবং ৪১ জন বালক রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাছুমা আরেফিন জানান, অভিভাবকরা সচেতন না হওয়ার কারণে বাল্যবিয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। তাই বাল্যবিয়ে রোধে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। তাহলেই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এফইএস/ওএইচ/