ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

সব বিভাগে ক্যাম্পাস, পাঠদানের ক্ষতিরোধে পরীক্ষাকেন্দ্র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৯
সব বিভাগে ক্যাম্পাস, পাঠদানের ক্ষতিরোধে পরীক্ষাকেন্দ্র অনুষ্ঠানে সম্মাননা তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

ঢাকা: দেশের আটটি বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি ক্যাম্পাস করা যেতে পারে কিনা-তা ভেবে দেখতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বিভাগীয় শহরে আটটি আলাদা ক্যাম্পাস হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশেই শিক্ষাটি পাবে বলে মনে করেন দীপু মনি।

এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পরীক্ষাসহ অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষার সময় পাঠদানরোধে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শুধুই পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

শনিবার (০২ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পারফরমেন্স র‌্যাংকিং ২০১৬-১৭ অ্যাওয়ার্ড ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।  

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরে মূল ক্যাম্পাস থেকে সারাদেশে দুই হাজারের বেশি কলেজ নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি বিভাগে আটটি ক্যাম্পাস হতে পারে কিনা-সেগুলো একেবারেই বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই...। এখন আমরা এতো বিশ্ববিদ্যালয় করছি এবং সারাদেশেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেছেন। সেখানে আমরা এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যেহেতু এই কলেজগুলো আছে সেই ক্যাম্পাস, অন্তত প্রতিটি বিভাগে ক্যাম্পাস করার কথা ভাবতে পারি কিনা? তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশেই কিন্তু এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাটি পাবে। সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে অবকাঠামো নিয়ে যদি বিষয় থাকে, জায়গা প্রাপ্তির বিষয় থাকে সেক্ষেত্রে ওই বিভাগের ঐতিহ্যবাহী কোনো একটি বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যার সে অবকাঠামোর সুযোগ আছে সে প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে এগুলো করা যায় কিনা- এগুলো ভেবে দেখা যেতে পারে।

পরীক্ষার কারণে পাঠদানের ক্ষতি পোষাতে পরীক্ষাকেন্দ্র নির্মাণের চিন্তার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, পরীক্ষার কারণে পাঠদান অনেকখানি ব্যাহত হয়। এতো ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করা হয়েছে, সেশন জট কমানো হয়েছে কিন্তু আমাদের বছরব্যাপী যে পরীক্ষাগুলো হয়; এইচএসসি, ডিগ্রি, অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষাই চলতে থাকে। সেই পরীক্ষার কারণে কিন্তু পাঠদান অনেকখানি বিঘ্নিত হয়। এটি অন্যান্য স্তরের জন্যও অনেকখানি প্রযোজ্য। তবে এই ক্ষেত্রে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়) অনেক বেশি প্রযোজ্য। কারণ এদের পরীক্ষা অনেক বেশি, বছরব্যাপী।

তিনি বলেন, মাধ্যমিকে যেমন শুধু নির্দিষ্ট একটা মাস বা দেড় মাস পরীক্ষা থাকে। কিন্তু অন্যদের বছরব্যাপী। কাজেই সেইখানে আমাদের আবারো এই পরীক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করে, মানে সেগুলো পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবেই কাজ করবে। সেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের উগ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।  

অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৮৫৭টি অনার্স কলেজের মধ্যে অনুষ্ঠিত র‌্যাংকিংয়ে জাতীয় পর্যায়ে ৫টি সর্বসেরাসহ মোট ৮৯টি কলেজকে সেরা কলেজ হিসেবে সম্মাননা সনদ, বই ক্রয়ের জন্য পুরস্কার চেক ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। এমন একটা সময় আসুক আমরা যেন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ মার্কিংয়ের মধ্যে দেখতে পাই। ২০২১ এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্য অর্জনের জন্য মূল কাজ শিক্ষার উন্নয়ন। সেজন্য প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।  

র‌্যাংকিং বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নানা প্রতিকূলতা ও নেতিবাচক ইমেজ কাটিয়ে উঠে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পারফরমেন্সভিত্তিক র‌্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তন কলেজগুলোর মধ্যে ইতিবাচক ও সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করবে এবং এর পাশাপাশি শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. হারন-অর-রশিদ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজ সেশনজটমুক্ত, যা আমাদের জন্য এক সুখের বার্তা ও বড় সাফল্য। এখন গুণ ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জেও আমাদের সফল হতে হবে। সে লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।  

তিনি জানান, এখন আমাদের শিক্ষার মানোন্নয়নের দিকে জোর দিতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য মডেল কলেজ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মান বিবেচনায় সেখানে পাঁচটি কলেজকে স্থান দেওয়া হবে। এছাড়া ১৩টি শতবর্ষী কলেজকে আলাদা করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য ড. মশিউর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ট্রেজারার প্রফেসর নোমান উর রশীদ, পুরস্কারপ্রাপ্ত কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রচুর সংখ্যক সুধীজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৯
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।