ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

যবিপ্রবিতে র‍্যাগিং-যৌন নিপীড়ন, ৯ ছাত্র বহিষ্কার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
যবিপ্রবিতে র‍্যাগিং-যৌন নিপীড়ন, ৯ ছাত্র বহিষ্কার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), ফাইল ফটো

যশোর: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনচারে বাধ্য করার অপরাধে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নয় ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে তাদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যবিপ্রবির জনসংযোগ দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং, যৌন নিপীড়ন এবং বিকৃত যৌনাচারে বাধ্যকরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ ৪০ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পায়।

মঙ্গলবার এসব অপরাধে জড়িত ছাত্রদের সঙ্গে তদন্ত কমিটি কথা বলে। এসময় জড়িত ছাত্ররা তদন্ত কমিটির সঙ্গে অসংলগ্ন, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তদন্ত কমিটি দেখে যে, র‍্যাগিংয়ে জড়িত ছাত্ররা যে অপরাধ করেছেন, এ বিষয়ে তারা যথাযথ অনুতাপ বা দুঃখ প্রকাশ করেননি। একইসঙ্গে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র‍্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তা প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়। এ সংক্রান্ত ফোন কলের রেকর্ডও তদন্ত কমিটির হাতে রয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাগিংয়ের শিকার হওয়া এক ছাত্র ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং স্বাভাবিক হতে পারছেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র‍্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে।

পরে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুইজনকে আজীবন, একজনকে দুই বছর এবং অপর ছয়জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সকলেই যবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।

আজীবন বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্ররা হলেন- দ্বিতীয় বর্ষের অলি উল্লাহ (রোল-১৭১৩১২) ও মাহমুদুল হাসান (রোল-১৭১৩৩৪), দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের রজিবুল হক রজব (রোল-১৫১৩৩০), এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন- চতুর্থ বর্ষের আবদুল কাদের (রোল-১৫১৩২৩), দ্বিতীয় বর্ষের আল মুজাহিদ আফ্রিদি (রোল-১৭১৩২৮), শহিদুল ইসলাম (রোল-১৭১৩১৪), রোকনুজ্জামান রোকন (রোল-১৭১৩০৫), অনুপ মালাকার (রোল-১৭১৩৩০) এবং শামীম বিশ্বাস (রোল-১৭১৩৩৭)।

একইসঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী (রোল-১৫১৩১৯), দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শতদল পাল (রোল-১৬১৩০২) ও ইমরান হোসেনকে (রোল-১৭১৩২০) চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে র‍্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে না মর্মে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের অভিভাবক এবং তারা নিজে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার না দিলে ওই তিন ছাত্রকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
ইউজি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।