এমন সব নানা সুবিধা নিয়ে ভারতের বোর্ডিং স্কুলগুলো এসেছে ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক মেলায়। এতে অংশ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, দিল্লি, তামিলনাড়ুসহ বিভিন্ন স্থানের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো।
১৯ ও ২০ জুলাই, দু’দিনব্যাপী এ মেলা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
শেষদিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, দর্শনার্থী প্রথম দিনের তুলনায় বেশি। আর বেশিরভাগ দর্শনার্থীই বোর্ডিং স্কুলগুলো সম্পর্কে জানতে এসেছেন।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা বলে জানা গেলো, ভারতের স্কুলগুলোর চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশে। তবে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের বেশি পছন্দের। যাতায়াতের সুবিধার কারণেই তারা পশ্চিমবঙ্গকে পছন্দের তালিকার ওপরের দিকে রাখছেন।
অনেক অভিভাবক তার সন্তানকে নার্সারিতেই ভর্তি করাতে ইচ্ছুক। অনেকে ক্লাস সিক্স কেউবা ক্লাস এইটের অফার খুঁজছেন।
তাদের চাহিদা বিবেচনায় স্কুলগুলো নানা প্যাকেজ নিয়েই বসেছে। জানা গেলো, নামি-দামি স্কুলগুলোতেও বছরে খরচ পড়বে দুই থেকে ছয় লাখ টাকা। আর এর ভেতরে একজন শিক্ষার্থীর যাবতীয় খরচ বহন করা হবে।
তবে সুবিধাভেদে কলকাতার বা পশ্চিমবঙ্গের বাইরের স্কুলগুলোর চাহিদা তৈরি করেছে অনেকের মাঝে। দিল্লি পাবলিক স্কুল, কলকাতা, বারাসাতের আদিত্য একাডেমি আর রেডব্রাইড ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি, ব্যাঙ্গালুরুতে অভিভাবকদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেল। স্কুলগুলোতে ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড পড়ানো হয়।
সাহিদা আক্তার তার মেয়ে রুবাইয়া রহমানকে ভর্তি করাতে স্বামীর সঙ্গে মেলায় এসেছেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এদের সুযোগ-সুবিধা তো সবই ভালো। তারতম্য হচ্ছে স্থান আর অর্থের। তবে আমাদের পছন্দ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠান।
আদিত্য একাডেমির উন্নয়ন কর্মকর্তা বিকাশ বাংলানিউজকে জানান, তারা ক্লাস ফোর থেকে টেন পর্যন্ত শিক্ষার্থী নেন। প্রতি ক্লাসের জন্য বছরে ছয় লাখ টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে সব ব্যয় নির্বাহ করা হবে। বুফে খাবার, জামা-কাপড়, ড্রেস, প্রাথমিক চিকিৎসা, খেলাধুলা, বইসহ যাবতীয় ব্যয় এর মধ্যেই হবে। আর খেলাধুলায় শীর্ষদের তারা প্রতিবছর এক লাখ টাকা বৃত্তি দেয়। এটা প্রতি বছরই দেওয়া হয়।
ইতোমধ্যে চারজন ভর্তির জন্য বুকিং দিয়ে গেছেন, এমনকি তাদের একজন রাঙ্গামাটি থেকেও এসেছেন বলে জানান বিকাশ।
আদিত্য একাডেমির ব্র্যান্ড প্রমোটার ঊর্মি জানান, ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত ২ লাখ ৭ হাজার ৫শ’ রুপি প্রতিবছর দিতে হয়। আর সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত বছরে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫শ’ রুপি, নাইন-টেনে প্রতিবছর ২ লাখ ৩৭ হাজার ও ইলেভেন-টুয়েলভে প্রতি বছর ২ লাখ ৩৩ হাজার রুপি নেওয়া হয়।
ক্যাম্পাসের ভেতরেই বহুতল ভবনের হোস্টেল এবং ডাক্তার-নার্সের সার্বক্ষণিক সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে খেলা-ধুলারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। পাঁচবেলা খাবার, ড্রেসসহ সব ব্যয় ওই বাৎসরিক টিউশন ফির মধ্যে।
তিনি বলেন, একদম বাড়ির যত্নই করা হয় বোর্ডিং স্কুলে। চিন্তার কোনো কারণ নেই। রয়েছেন হোস্টেলের প্রতি ফ্লোরে ১৫ জন ‘আন্টি’। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো। পিতা-মাতা ছাড়া বাইরে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অভিভাবক গেলে সেটার জন্য পিতা-মাতার অনুমতি দেখাতে হয়।
‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক মেলাটি ভারতের অ্যাফেয়ার্স এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটড এবং বাংলাদেশের এ টু জেড স্টাডি আয়ােজন করে। এতে সহযােগিতা করে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন।
ঢাকার পর তারা ২২-২৩ জুলাই চট্টগ্রামে এবং ২৫ জুলাই খুলনায় এ মেলার আয়োজন করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
ইইউডি/এইচএ/