বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী থানায় এজাহার দাখিল করেন।
তিনি আরও বলেন, যে সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে, ইতোমধ্যে সেই সড়কের পাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা যায়, গত সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় রাজশাহীর নগর ভবন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী রুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার পর ওই ছাত্রী নিজেই তার ফেসবুকে ঘটনাটি তুলে ধরেন।
তিনি লিখেন, আমার বাসা উপরশহর। বাসা দূরে বলে আমি সাধারণত রুয়েট থেকে রেলগেট পর্যন্ত অটোতে আসি। আজকেও প্রতিদিনের মতো অটো নিলাম, সঙ্গে ছিল দু’জন অপরিচিত রুয়েটিয়ান ভাইয়া আর একজন ভদ্রলোক। রুয়েটিয়ান ভাই দু’জন চিশতিয়ার সামনে নেমে গেলেন। ভদ্রা পার হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ অটোওয়ালা অটো থামায় দিলো, সামনে থাকা ভদ্রলোক কে বললো, আপনি নেমে যান, আমি নিজস্ব লোক তুলবো! আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই ভদ্রলোককে জোরপূর্বক নামিয়ে চারজন গুণ্ডা উঠে অটো চালানো শুরু হয়ে গেলো! ভদ্রা থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত রাস্তা মোটামুটি নির্জন, ইচ্ছামত সেই চারজন আমাকে স্পর্শ করা শুরু করলো। হাজারবার অটো থামানোর জন্য চিৎকার করার পরও অটোওয়ালা পশুর মত হাসতে থাকলো..।
তাকে চলন্ত অটোরিকশা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো লিখেন, নগর ভবনের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে তারা অটো থেকে ধাক্কা মেরে আমাকে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে গেলো! যতক্ষণে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছি ততক্ষণে অটো বহুদূর...'।
তাকে যৌন হয়রানির কোনো বিচার হবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেন, 'কাহিনীটা শুধু শেয়ার করলাম। এইটা বাংলাদেশ, কোনো বিচারের আশা আমি করছিনা। '
তিনি আরও লিখেন, 'অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে আমার পোশাক কি ছিলো? সাধারণ বাঙালি নারীর মত সালোয়ার কামিজ। '
ওই ছাত্রী তার ফেসবুকে ঘটনাটি তুলে ধরার পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার পোস্টটি অসংখ্যবার লাইক ও শেয়ার হয়েছে।
গত ১০ আগস্ট রাজশাহী নগরীতে স্ত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করে বখাটেদের হামলার শিকার হন রুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রাশিদুল ইসলাম। ওই ঘটনায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনায় তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা , আগস্ট ২১, ২০১৯
এসএইচ