বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, খুলনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ১ম ও ২য় পছন্দ এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়। নিকটবর্তী ও আসন সংখ্যা বেশি হওয়ায় খুব অল্প দিনে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনেকের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আগস্ট মাসের ৫ তারিখে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সি ইউনিট (বিবিএ) ও দুপুর দেড়টা থেকে ৩টা বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২৯ আগস্ট ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে ডি ইউনিট ও দুপুর ৩টা থেকে ই ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিতে চাওয়া বাণিজ্য ও মানবিকের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়বেন।
তারা আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভর্তিপ্রক্রিয়া চালু আছে তাতে দেখা যায়, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ছুটতে হয় এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে, এক জেলা থেকে আরেক জেলায়, এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে। ভর্তি পরীক্ষার তারিখ একই দিনে হলে অনেকেই দুই জায়গায় পরীক্ষা দিতে পারবে না। অনেক শিক্ষার্থী এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে পছন্দের বিষয়টিতে ভর্তি হতে পারেন না; এমন বিষয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হন, যা তিনি পড়তে চাননি। ফলে তিনি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না। তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তার যোগ্যতাসাপেক্ষে সব ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত। যার জন্য ভর্তিপরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমস্বয়ের প্রয়োজন।
অনেকে অভিযোগ করে বলছেন, গোপালগঞ্জের স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এভাবে তারিখ নির্ধারণ করেছে।
খুলনা থেকে এবছর ভর্তিপরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে শারমিন আক্তার ও আকিব আল হাসান নামে দুই শিক্ষার্থী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, আমি তো টাকা দিয়ে ফরম তুলে ভর্তিপরীক্ষা দেবো। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমস্যা কী? এতোদিন থাকতে কেন দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় একই দিনে পরীক্ষা নেবে?
তারা পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় তো ৫ আগস্ট ভর্তিপরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জেনেশুনে ইচ্ছেকরে একই তারিখে পরীক্ষার দিন নির্ধারণ করেছে।
তারা আরও বলেন, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরপ্রবি) ভর্তিপরীক্ষার তারিখ একই সময়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষা ছিল।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘবে সমন্বিত ভর্তিপরীক্ষার দাবি জানান এসব শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. খন্দকার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘসময় তার ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম গোলাম হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এক লাখের বেশি পরীক্ষার্থী ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নেয়। এত শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার মতো জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। বিভিন্ন স্কুলে পরীক্ষা নিতে হয়। এজন্য শুক্র ও শনিবার বেছে নিতে হয়।
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষার তারিখ একই দিন হওয়ার বিষয়টি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
এমআরএম/এএ