২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় রুশ ফেডারেশনের তাতারস্তানের রাজধানী কাজানে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে কেবল দুই বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম ও কাশেফ মাহবুব চৌধুরী জিতিছেন এ পুরস্কার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলিপুর ব্রিজের পশ্চিমপাশে ধলেশ্বরী নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে নির্মিত হয়েছে বাঁশের তৈরি একটি অবকাঠামো। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্কুল। সেখানে গিয়ে দেখা হয় স্কুলটির সার্বক্ষণিক কাঠমিস্ত্রির দায়িত্বে থাকা প্রাণ বল্লভের সঙ্গে। এসময় তার সঙ্গে কথা হয় স্কুলটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তিনি একটি খেয়া নৌকা করে নিয়ে যান স্কুলের মূল অবকাঠামোতে। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখান স্কুলের সব কক্ষ। প্রায় দেড়শো ফুট লম্বা ও পয়ত্রিশ ফুট প্রশস্ত অবকাঠামোতে রয়েছে শিশুদের লেখাপড়ার মতো সব সুযোগ সুবিধা। উভচর এ অবকাঠামোতে শিশুদের পাঠদানের তিনটি কক্ষ ছাড়াও রয়েছে তাদের খেলার জায়গা ও টয়লেট। শ্রেণীকক্ষের নামগুলোও বেশ চমকপ্রদ- সিন্দু, বিন্দু ও কনা। তবে কেন এমন নামকরণ, তার কোনো তথ্য জানা যায়নি। এছাড়াও রয়েছে সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা। সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে, সম্পূর্ণ অবকাঠামোটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, দড়ি ও ড্রাম দিয়ে। আর এজন্যই অবকাঠামোর স্থপতি পেয়েছে আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার-২০১৯ পুরস্কার।
স্কুলটিতে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রয়েছে বাঁশের তৈরি র্যাম্প, যদিও বর্ষার কারণে এখন সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। স্কুলের টয়লেটের বর্জ্য ফেলার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে সেফটিক ট্যাংক। এই ট্যাংকও মূল অবকাঠামোর মতোই উভচর।
স্কুলের প্রশাসক সালাম মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজিয়া আলম নামে এক নারী স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। চিকিৎসার জন্য তিনি এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রথমে ২০০৯ সালে সাভারের নগরকুণ্ডা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তিতে সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে ২০১২ সালে হযরতপুরের কদমতলী এলাকায় আবারো ভাড়া বাসায় নিয়ে আসা হয় স্কুলটি।
এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কেরানীগঞ্জের হযরতপুরের কানারচরে জমি ক্রয় করে এই স্কুলটি নির্মাণের কাজ করেন। বাঁশ দিয়ে স্কুলটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থপিত সাইফ উল হককে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুল নির্মাণের কাজ শেষ হয়। এখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এমনকি শিক্ষার্থীদের বই ও শিক্ষা উপকরণও আমরা দেই। শিক্ষার্থীদের নাস্তা খাওয়ানো হয়।
স্কুলের প্রশাসক সালাম মিয়া বাংলানিউজকে আরও জানান, এবার বর্ষায় পানি বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না। তাই সাময়িকভাবে এখানে বন্ধ রয়েছে পাঠদান কর্মসূচি। তবে বিকল্প হিসেবে ভাড়া বাসায় চলছে পাঠদান।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এসএইচ