ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কুয়েটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
কুয়েটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন জাঁকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করলো কুয়েট। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রীতি সমাবেশ, বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা, শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনী, কুয়েটের অর্জন শীর্ষক প্রেজেন্টেশন, আলোচনা সভা, বৃক্ষরোপণ, দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবগুলো উন্মুক্তকরণ, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় বেলুন ও শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’র উদ্বোধন করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ।

উদ্বোধনের পরই বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে ফুলবাড়ীগেটস্থ খুলনা-যশোর রোড অতিক্রম করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে সম্পন্ন হয়।

আনন্দ শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও দৃশ্য সম্বোলিত প্ল্যাকাড বহন করেন।

২০০৩ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। খুলনা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশেই ফুলবাড়ীগেট এলাকায় ১০১ একর এলাকা নিয়ে মনোরম পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের জন্য ভৌত অবকাঠামো, লাইব্রেরি ভবন, আধুনিক ল্যাবরেটরি ও কম্পিউটার সেন্টার, ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হল, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, পুকুর, মেডিক্যাল সেন্টার, মসজিদ ইত্যাদি বিদ্যমান। বর্তমানে তিনটি অনুষদের অধীনে ২০টি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এই বিশ্ববিদ্যায়ে পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এছাড়া সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষক, দেড় শতাধিক কর্মকর্তা এবং তিন শতাধিক কর্মচারী দিয়ে চলছে কুয়েটের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং, বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও মানবিক বিভাগের কার্যক্রম রয়েছে। রয়েছে তিনটি ইনস্টিটিউট। অদূর ভবিষ্যতে বাড়বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন, বিভাগ ও লোকবল। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভিন্নভাবে ঐতিহ্য বহন করছে। এটি ১৯৬৭ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৭৪ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে, অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও খুলনাবাসীর ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনা। এটি একটি স্বায়ত্বশাসিত ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হলেও বিভিন্ন সমস্যা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা থাকার কারণে সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের আরও তিনটি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিসহ এই প্রতিষ্ঠান ২০০৩ সালের ০১ সেপ্টেম্বর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। যাত্রা শুরু হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের আওতায় ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় একাধিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ এবং এসব গবেষণাগুলো দেশ-বিদেশের গবেষণাপত্রে নিয়মিত প্রকাশনার সুবিধা বিদ্যমান। উন্নত টেলিকমিউনিকেশন, ইন্টারনেট, ওয়াইফাইসহ ক্যাম্পাস বিস্তৃত ফাইবার অপটিক ব্যাকবোন নেটওয়ার্কের সুবিধা একটি উচ্চতর শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যাহা এই বিশ্ববিদ্যালায়ে বিদ্যমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।