শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ অভিমত দেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে আয়োজিত এ সমাবেশে লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ছাত্রনেতারা বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ঢোল পেটানো হচ্ছে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে। সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের ফাঁকফোকর আমরা জানি। যদি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সত্যতা থাকতো, তাহলে আজকে যারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তাদের প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানাতেন। সরকার তাদের দাবি অনুযায়ী অনুসন্ধান করে শুধু জাবি নয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করত। খুবই বিস্ময়কর! শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাদের অভিনন্দন জানানোর বদলে হয়রানি করার নানা রকম পথ তৈরি করা হচ্ছে। সরকার দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় সব রকমের শক্তি নিয়োগ করেছে। এসময় তিনি অবিলম্বে উপাচার্যকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত করে বিষয়টি সমাধান করার দাবি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি (সহ সভাপতি) নুরুল হক নুর বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রে কতটুকু ঘুণে ধরেছে, তা বোঝা যায় একজন দুর্নীতিবাজকে সরানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে হয় দেখে। বর্তমানে বিষয়টি রাষ্ট্র বনাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ আমরা দেখি যে সরকার প্রধান এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী যে ধরনের কথা বলেন, প্রকারান্তরে তার মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হুমকি দিয়েছেন। আমরা বলতে চাই হুমকি দিয়ে দমাতে পারবেন না। সময় থাকতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিন। অন্যথায় গদি পোড়ানোর জন্য সারা বাংলাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। এই আন্দোলন এখন শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, এটি নৈতিকভাবে সমগ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এসময় তিনি আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি না মানলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার মতো কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা অনেকাংশে হতাশ হয়েছি দুর্নীতিবাজ ভিসির পক্ষে সরকারের অবস্থান দেখে। একটি দেশের জন্য এটি কলঙ্কজনক। অতিদ্রুত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপসারণ করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানাই।
সমাবেশ থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- হামলার নির্দেশদাতা দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে অপসারণের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা ও হামলাকারীদের বিচার করা, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হল ভ্যাকেন্টের অবৈধ সিদ্ধান্ত বাতিল করা এবং দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার ও তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৯
এসকেবি/টিএ