ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে ভর্তি অনিশ্চিত ‘হোটেল শ্রমিক’ শাকিলের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০
জাবিতে ভর্তি অনিশ্চিত ‘হোটেল শ্রমিক’ শাকিলের

লালমনিরহাট: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তির সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে মেধাবী হোটেল শ্রমিক শাকিলের ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

শাকিল লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামের ভূমিহীন হোটেল শ্রমিক মমিনুল ইসলামের ছেলে এবং আদিতমারী স্টোরপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের নাতি।

স্থানীয়রা জানান, ভূমিহীন মমিনুল ইসলাম এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসারের খরচ যোগাতে হোটেল শ্রমিকের কাজ করেন।

আর্থিক অনটনের কারণে বড় ছেলে শাকিল রানাকে আদিতমারী স্টোরপাড়া গ্রামে তার নানার বাড়িতে রেখেছেন। ছোটবেলা থেকেই চা বিক্রেতা নানা আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে থেকে নানার চায়ের দোকানে সহায়তার পাশাপাশি পড়াশোনা করছেন শাকিল রানা।

আর্থিক অনাটনের কারণে লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হলেও অদম্য মেধাবী শাকিল রানা চালিয়ে আসছেন লেখাপড়া। আদিতমারী হাসপাতাল গেটে নানার চায়ের দোকানে কাজ করেই ২০১৭ সালে সরকারী আদিতমারী জিএস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.০৯ পান। পরে ভর্তি হন রংপুর সরকারী কলেজে। সেখানে টিউশনি করে ২০১৯ সালে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.২৫ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। পরে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭২তম এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮৩৩তম মেধাক্রমে উত্তীর্ণ হন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হতে মনস্থির করেন শাকিল রানা। কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে ভর্তি হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। জাবিতে ভর্তি ফি ৮ হাজারসহ আনুষঙ্গিক মিলে ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। ভর্তির টাকা যোগাতে কিছুদিন ধরে সে নানা আব্দুস সাত্তারের চায়ের দোকানে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করে। কিন্তু পর্যাপ্ত টাকা যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে টাকা যোগাড় করতে না পারলে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার স্বপ্ন তার অধরা থেকে যাবে। যদিও বসে নেই তার পরিবারের লোকজন। তারা বিভিন্ন এনজিও কাছে যাচ্ছেন ঋণ সহায়তার জন্য। কিন্তু সঞ্চয় ছাড়া কেউ তাদের ঋণ দিতে রাজি হচ্ছেন না।

চা বানাচ্ছেন শাকিল।  ছবি: বাংলানিউজ

শাকিলের নানা আব্দুস সাত্তার বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তির টাকা যোগাড় করতে বিভিন্ন এনজিওর কাছে গিয়েছি। কিন্তু সঞ্চয় না থাকায় কেউ ঋণ দেয়নি। এখন তার ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা কোথায় পাবো, কে দেবে এত টাকা? সময়ও বেশি নাই। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাকে ভর্তি হতে হবে।

শাকিল রানা বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তির টাকা কেউ ঋণ হিসেবে দিলেও আমি গ্রহণ করবো। পরে তা আমি পরিশোধ করে দেবো। আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই।

লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন শাকিল। তার সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ০১৭৮৩০৯৯৯২১।

শাকিলের প্রতিবেশী ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খুবই কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে শাকিল। আর্থিক সহযোগিতা পেলে অদম্য মেধাবী শাকিল রানা তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিক্ষা এর সর্বশেষ