ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নবীনদের বরণ করে নিল ফেনী ইউনিভার্সিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
নবীনদের বরণ করে নিল ফেনী ইউনিভার্সিটি ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ফেনী ইউনিভার্সিটিতে ১৯, ২০ ও ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, মৎস বিজ্ঞানী  প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, “আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্পটা বলতে চাই।

আমি তখন স্কুলে পড়ি। তৎকালীন পকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়। সাইট সিলেকশন কমিটি’র প্রধান ছিলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. ওসমান গনি। তারা একটি সুবিধাজনক জায়গা খোঁজ করছিলেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের কাছে তাদের জন্য একটি রিসিপশান আয়োজন করা হয়। তখন আমাদের মধ্যে একটি আকর্ষণ তৈরি হয়েছিল যে পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়টি তাহলে ফেনীতেই হচ্ছে! আমার এখনো মনে আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য সাইট সিলেকশন কমিটি কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ফেনী ভিজিট করেন। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি চট্টগ্রামেই স্থাপিত হয়। এটি ৫০ বছর আগের গল্প। তাই ফেনীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল। ”

তিনি আরও বলেন, “নোয়াখালীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তাও ফেনী থেকে ৫০ মাইল দূরে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যাওয়ার পর ইউজিসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। এসময় সাত্তার ভাই (আবদুস সাত্তার) রেজা সাহেব (শাহিদ রেজা শিমুল) সহ কয়েকজন ঢাকা ক্লাবে আমিসহ ফেনীর আরো কয়েকজন মিটিং করি। সবারই নিজ এলাকার জন্য টান থাকে। আমার ক্ষেত্রেও তার বিকল্প নয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইল উত্থাপন করি। প্রধানমন্ত্রীও এ ক্ষেত্রে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। মফস্বলের শিক্ষার্থীদের জন্য কম খরচে উচ্চ শিক্ষার একটি আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বারোপ করেন। এভাবেই ফেনী ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ”

তিনি বলেন, “দেশের অধিকাংশ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা বিভিন্ন খাত দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থ গ্রহণ করেন। কিন্তু ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা ব্যাতিক্রম। তারা সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তাই তারা নিতে নয়, বরং  দিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। ”

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা এখানে ভর্তি হয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ। এখন টার্গেট ঠিক করে তোমাদের এগোতে হবে। সব সময় সৎ পথে থাকতে হবে। ফেনী ইউনিভার্সিটি তোমাদের সব সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে। ”

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রেশার্স রিসিপশন-২০২০ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।  

অতিথি ও নবীনদের বরণ করে নেয়ার পর ফেনী ইউনিভার্সিটিতে পড়ে নিজেদের অনুভতির কথা জানান নতুন-পুরাতন শিক্ষার্থীরা। তুলে ধরেন এখানকার শিক্ষার মান ও সুযোগ-সুবিধার কথা। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করার পাশাপাশি শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহ-সভাপতি শাহিদ রেজা শিমুল, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সদস্য আবদুস সাত্তার, নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ডা. এ এস এম তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়োজিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর তায়বুল হক, রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ও ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভিাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান বক্তব্য প্রদান করেন।

নবীন বরণ অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান ফেনী ইউনিভার্সিটি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ। এসময় তিনি বলেন, “কোয়ালিটির ব্যাপারে কোনো আপোষ করে না ফেনী ইউনিভার্সিটি। আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়, তবে সেটা আমরা প্রতিনিয়ত সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করছি। ”

বাণিজ্য অনুষদের সিনিয়র লেকচারার মাহজাবীন তাবাসসুম সুজানা ও আইন বিভাগের প্রভাষক সাখাওয়াত সাজ্জাদ সেজানের সঞ্চলনায় ব্যবসায় প্রশসান অনুষদের চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক আবুল কাশেম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক ও ছাত্র উপদেষ্টা (ভারপ্রাপ্ত) আতাউল হাকিম মাহমুদ, ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল কান্তি পাল অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।  

পরে স্থানীয়, জাতীয় জাতীয় পর্যায়ের  সঙ্গীতশিল্পী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
এসএইচডি/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।