ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২০
ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

ঈশ্বরদী (পাবনা): পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী মাথালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার ভৌমিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

এদিকে ঘটনার পর থেকেই বিদ্যালয় ফান্ডের বেশ কিছু টাকা, ল্যাপটপসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পলাতক রয়েছেন ওই শিক্ষক। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকা।

 

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি সরকার বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মুনছুর রহমান সোমবার (২ মার্চ) এক অফিস আদেশে এ বরখাস্ত করেন।  

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী মাথালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার ভৌমিক দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় নানাভাবে শারীরিক ও মানুষিকভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের অনুপস্থিতিতে ৫ম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদের শ্লীলতাহানি করে। তাৎক্ষণিক ওই শিশু শিক্ষার্থীরা কান্না শুরু করে। পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে বিষয়টি শ্রেণিকক্ষে থাকা শিক্ষক ও বন্ধুদের জানিয়ে দেয়। খবরটি জানাজানি হলে অভিভাবকসহ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে উত্তেজিত হয়ে অপরাধী শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে। সেদিন সুকৌশলে পালিয়ে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। পরে অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।  

সহকারী শিক্ষক ইমরান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর আগেও কয়েকটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের  হয়রানি করে বদলি হয়ে এ বিদ্যালয়ে আসেন। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় নানা ছলে গায়ে হাত দিতেন। এটা সচেতন শিশু ছাত্রীরা পছন্দ করতো না। এ ব্যাপারে তাকে সাবধানও করা হয়, তিনি শোনেননি। অবশেষে তার শাস্তি দাবি করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও  শিক্ষিকাবৃন্দ আলাদা আলাদভাবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আইনুল হক বাংলানিউজকে জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একজন খারাপ লোক। তাই তার শাস্তি ও বদলি দাবি করে শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটা দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  

ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি সরকার বাংলানিউজকে জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার ভৌমিক বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নানাভাবে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। ভাড়ইমারী মাথালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযুক্ত শিক্ষক মিলনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি দাবি করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়। সেখান থেকে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।