ঢাকা: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফেকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ৩৯৬ শিক্ষার্থী।
‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করায় ওই দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও এবার ৩৯৬ জন শিক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাননি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
আগের দুই পরীক্ষায় যারা চতুর্থ বিষয়ের জিপিএ মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন, তাদের কেউ কেউ এবার পদ্ধতি মূল্যায়নে চতুর্থ বিষয় বাদ দেওয়ার ফলে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাননি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল তৈরির জন্য সাবজেক্ট ম্যাপিং করায় জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও এবার ৩৯৬ জন জিপিএ-৫ পায়নি। সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছে। যখন ম্যাপিং করা হয়েছে, তখন জিপিএ-৫ এর জন্য যে নম্বর দরকার ছিল, তা তারা পাননি। আবার বিষয়ভিত্তিক ম্যাপিং করায় অনেকে আগের দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পেলেও এবার সেটি অর্জন করেছেন। জিপিএ-৫ না পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বেশি।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী।
দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়।
যেভাবে হয়েছে সাবজেক্ট ম্যাপিং
শিক্ষামন্ত্রী জানান, জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ৭৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিবেচনা করে গতবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বরের ৭৫ শতাংশ বিবেচনা করে এইচএসসিতে আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত/জীববিজ্ঞান বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসি এর পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত/জীববিজ্ঞান বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
মানবিক ও অন্যান্য বিভাগের ক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক পর পর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্রুপ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার গ্রুপভিত্তিক পর পর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।
জিপিএ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এসব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। আংশিক বিষয়ের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অকৃতকার্য বিষয়ের নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রেও উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্ট মঞ্জুরুল কবীর জানান, আগের দুই পরীক্ষায় যারা চতুর্থ বিষয়ের জিপিএ মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন, তাদের কেউ কেউ এবার পদ্ধতিতে মূল্যায়নের ফলে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাননি। তাই এই ৩৯৬ জন জিপিএ-৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, জেএসসি এবং এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন কিন্তু ২০১৯ সালে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাননি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৬ হাজার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২১
এইচএমএস/এইচএডি