ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষকরাই ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করছেন বিদ্যালয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
শিক্ষকরাই ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করছেন বিদ্যালয়

লালমনিরহাট: রাত পোহালেই শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখর হবে লালমনিরহাটের সব বিদ্যালয়। এ জন্য শিক্ষকরাই ধুয়ে-মুছে প্রস্তুত করছেন নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের (২০২০) মার্চ মাসে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর কয়েক দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়। ফলে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর তালা বন্ধই ছিল জেলার শত শত বিদ্যালয়ে। এ কারণে সে গুলোর খেলার মাঠ ও শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের পরিবেশ নষ্ট হয়। ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয় শিক্ষার্থীহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

এ অবস্থায় সরকারি নির্দেশনায় দীর্ঘ দেড় বছর পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এক যোগে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান চালু হবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনাও মেনে চলতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ময়লা আবর্জনায় পূর্ণ থাকা বিদ্যালয়গুলো ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করার জন্য সরকারিভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাই জেলার সব বিদ্যালয় এরই মধ্যে ধুয়ে-মুছে পাঠাদানের উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রাথমিক স্তরের বাকি সব শ্রেণির পাঠাদান চালু থাকলেও বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিকের পাঠদান। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণি প্রতিদিন এবং অন্যান্য শ্রেণির পাঠদান সপ্তাহে একদিন হিসেবে চালু করতে শ্রেণি রুটিন পৌঁছে দেয়া হয়েছে জেলার সব বিদ্যালয়ে।

বন্যা আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নষ্ট হয়েছে। এ দুটি বিদ্যালয়ে পাঠদান সচল রাখতে স্থানীয়ভাবে একটি অস্থায়ী বিদ্যালয় করা হয়েছে। অপরটির পাঠদান চলবে স্থানীয় পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্থানীয়দের সহায়তায় বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষগুলো ধোয়া-মোছার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় অনেক ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস নষ্ট হয়েছে বলেও দাবি করেছেন শিক্ষকরা। তারপরও সরাসরি পাঠদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

আদিতমারী উপজেলার দ.ব. হাজারী জোবায়ের টিপু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লায়লা বেগম বিজলী বলেন, দীর্ঘদিন পরে বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হবে শুনেই আনন্দ লাগছে। তাই কষ্ট হলেও মনের আনন্দে সব শিক্ষক মিলে বিদ্যালয় ধোয়া-মোছা করছি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বরণে পুরো বিদ্যালয় প্রস্তুত করা হয়েছে। রাত পোহালে প্রিয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। আবারও প্রাণ ফিরে পাবে প্রিয় কর্মস্থল।

লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শতভাগ মাস্ক পরে পাঠদানে অংশ নেবেন। প্রত্যাহিক সমাবেশ ছাড়াই বিদ্যালয়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলবে পাঠদান। আপাত স্কুল ড্রেস (নির্ধারিত পোশাক) বাধ্যতামূলক নয়। নদী ভাঙনের কারণে দু'টি বিদ্যালয় স্থান পরিবর্তন করা হলেও সেখানে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলে শিশুকল্যাণের ৫টিসহ জেলার ৭৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠদানের জন্য ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১

এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।