ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

গৌরীপুরে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে ফাটল!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
গৌরীপুরে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে ফাটল! বেকারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বেকারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মিত হয়েছে দ্বিতল নতুন ভবন। কিন্তু নবনির্মিত ভবনটি কাজ শেষে হস্তান্তর করার আগেই মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবক মহল।      

স্থানীয় মো. আতিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, নবনির্মিত ভবনটি এখনো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এর আগেই ভবনের দ্বিতীয় ও প্রথম তলার ফ্লোরে ফাটল দেখা দিয়েছে। দরজা-জানালাগুলোও বেশ নিম্নমানের। সেই সঙ্গে ওয়ারিং কাজে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সুইচগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণ হুমকিতে পরার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছরের ১১ জানুয়ারি পিইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে প্রাক্কলিত বরাদ্দ মূল্য ছিল ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ৯৮৭ টাকা। এর বিপরীতে চুক্তি মূল্য ধরা হয় ৮২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮৮ টাকা। ট্রেন্ডারের মাধ্যমে এ কাজের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি নিযুক্ত হয়েছেন প্রতিষ্ঠান মেসার্স তালুকদার ট্রেডার্স।  

এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, অনিয়মের অভিযোগ শুনে আমরা ভবন পরিদর্শন করেছি। এর আগেও নির্মাণ কাজের শুরুতে সামগ্রীগুলো ল্যাবে পরীক্ষা করে মান যাঁচাই করা হয়েছে। এতে নিম্নমানের সামগ্রী পাওয়া যায়নি। কিন্তু নবনির্মিত ভবনে বিদ্যুতের কাজে এবং সিঁড়ির প্লাস্টারের কাজে সমস্যা আছে। সেই সঙ্গে ভবনের মেঝেতে কিউরিং পর্যাপ্ত না হওয়ায় মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলেও স্বীকার করে তিনি ঘটনার ব্যাখ্যা করেন।      


প্রকৌশলী আরও জানান, এ নির্মাণ কাজে ঠিকাদার ৭২ লাখ টাকার বিল নিয়ে নিলেও এখনো প্রায় ১১ লাখ টাকা বকেয়া আছে। সঠিকভাবে কাজ বুঝে নিয়ে বাকি বিল পরিশোধ করা হবে।

তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহিম উদ্দিন বলছে উল্টো কথা। তার ভাষ্য— নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার ঠিকাদারকে বলা হলেও পাত্তা দেননি। আমরা এই অনিয়মের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুবিতা রাণী দাসও বলছেন একই কথা। তার ভাষ্য— করোনার কারণে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি, এই সুযোগে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করেছে ঠিকাদার। এলজিইডি কর্মকর্তাসহ ঠিকাদারকে বিষয়টি বলেছি, কিন্তু তারা আমার কথা না শোনেনি।  

এসব বিষয়ে মেসার্স তালুকদার ট্রেডার্সের পরিচালক সাইফুল ইসলাম তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়নি। না বুঝে অনেকেই মন্তব্য করছেন।

ঘটনার বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বাংলানিউজকে বলেন, শুনেছি ঘটনাটি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে ময়মনসিংহ স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান খান বাংলানিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট দ্বায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজের তদারকিতে গাফিলতি করেছে। তা না হলে কাজ শেষে এমন অভিযোগ উঠার কথা নয়। এর দায় তাদেরই নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।