ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

স্কুল-কলেজ খুললেও অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
স্কুল-কলেজ খুললেও অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি (সিলেট): দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর দেশের স্কুল-কলেজগুলো খুলে দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাস করলেও অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।

এতে ক্যাম্পাস, ক্লাসরুম ও আবাসিক হলে ফেরার আকুলতা বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। তবে কবে নাগাদ ক্যাম্পাস খুলবে তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা আসেনি। তবে অক্টোবরের মাঝামাঝি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তাগিদ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি অলসভাবে সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা। করোনাকালীন সময়ে সেশনজট এড়াতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তবে ইন্টারনেট জনিত সমস্যার কারণে তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শ্রেণি কার্যক্রম ও আবাসিক হল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রশাসন। তবে এখনো সুুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। বর্তমানে আবাসিক হলগুলোতে সংস্কারসহ উন্নয়নমূলক নানা কার্যক্রম চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম সাগর বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর দেশের স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়াটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। তবে স্কুল-কলেজ খোলার পূর্বে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো খোলা উচিত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছেন। টিকা ছাড়া যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া যায় তবে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাই।

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সরোয়ার জামান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মহামারির এ কঠিন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়াটা অনন্য বিজয়। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়াও এখন সময়ের দাবি। কিন্তু কোনোরকম অনিশ্চয়তা রাখা যাবে না। সব শিক্ষার্থীদের দ্রত সময়ে টিকার আওতায় এনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা পেতে দেরি হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা উচিত।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী চৈতী দাশ বাংলানিউজকে বলেন, আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিক। সেশনজট না লাগুক। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হোক। আর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র করে যানবাহন ও টঙ দোকান চলে। তখন এগুলোও সচল হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সকল পেশার মানুষের কথা চিন্তা করে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া দরকার।

শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে আমরা প্রস্তুত। তবে যখন খুলবে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই এক বা দুই ডোজ টিকা দিয়ে অথবা রেজিস্ট্রেশন করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। যারা এখনো করেনি তাদের অবশ্যই ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ বা আবাসিক হলে থাকার সুযোগ পাবে না।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় দীর্ঘ ১৭ মাসে দফায়-দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর সাধারণ ছুটি শেষ হয়। এরপর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।