ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষার্থীদের সেই ফুল গ্রহণ করলেন ড. জাফর ইকবাল

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
শিক্ষার্থীদের সেই ফুল গ্রহণ করলেন ড. জাফর ইকবাল ফুল হাতে ড. জাফর ইকবাল। ছবি: বাংলানিউজ

শাবিপ্রবি, (সিলেট): পুলিশ প্রশাসনকে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ফুল গ্রহণের জন্য আহ্বান করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সেই ফুল না নিয়ে মুখ ফিরিয়ে রাখেন পুলিশ সদস্যরা।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের সেই ফুল গ্রহণ করেছেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

বুধবার অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে এলে শিক্ষার্থীরা প্রিয় স্যারকে ফুল দিয়ে অভিবাদন জানান। এমন মনোরম দৃশ্য দেখা যায় উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ড. জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে চেষ্টা করেছেন, পরে অনশন ভাঙিয়েছেন। এ সময় হাতে পানি নিয়ে তা পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। এরপর শিক্ষার্থীরা তাকে এবং তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

আন্দোলনরত মারুফ হাসান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে পুলিশ প্রশাসনকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে ফুল নিয়ে আসি। কিন্তু তারা আমাদের ফুল না নিয়ে তা ফিরিয়ে দেন। তবে, আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত আমাদেরও প্রিয় স্যার আমাদেরও দেখতে এসেছেন। তাই আমরা তাকে ফুল দিয়ে সম্মান জানিয়েছি।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. জাফর ইকবাল বলেন, যেখানে চিকিৎসক নেই। তারা যেভাবে সবকিছু ব্যবস্থা (ম্যানেজ) করেছে। ছেলে-মেয়েদের সুস্থ রেখেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন, সেটা করেছে। আমি তাদের বিষয়ে আশাবাদী, তারাই আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তিন বছর আগে আমি যখন অবসরে যাই। তখন চিঠি দিয়ে বলেছিলাম, ছাত্রদের আপনি অবহেলা করবেন না। ছাত্রদের যে ক্ষোভ আছে, তা বিক্ষোভে রূপ নেবে। তা এখন অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। এটি তিন বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। যারা আন্দোলন করেছেন, তারা একেবারেই সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা সঙ্গত কারণে আন্দোলন করেছেন। এটা যৌক্তিক দাবি বলে মনে করেন তিনি।

জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬টি সংগঠন ছিল। এর কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা অন্য কোথাও প্রতিযোগিতায় গেলে তাদের ক্রিয়েটিভিটি ও নেতৃত্বগুণে আলাদাভাবে চেনা যেতো। কিন্তু তিনি (ভিসি) অ্যাকাডেমিক, শিক্ষা এসবের কিছুই বোঝেন না।

ড. জাফর ইকবাল বলেছেন, আমি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমার সঙ্গে সরকারের উচ্চ মহলের কথা হয়েছে। তারা যদি আমাকে দেওয়া কথাগুলো না রাখে, তবে বোঝবো, শুধু আমি কিংবা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই নয়, পুরো বাংলাদেশের প্রগতিশীল মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রদের দানবের কাছে রেখে যাচ্ছি।

অবশ্য এ প্রসঙ্গে ড. জাফর ইকবাল আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্ডারএস্টিমেট করবেন না, এতটুকুই বলতে চাই।

এর আগে ১৬ জানুয়ারি লাঠিসোটা ও গান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে অভিবাদন জানিয়ে তাদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে ফুল দিয়ে অভিবাদন জানান আন্দোলনরতরা। তবে, পুলিশ সেদিন শিক্ষার্থীদেরও ফুল না নিয়ে তা প্রত্যাখান করে। সেদিন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজবাহার আলী শেখ বলেছিলেন, আমরা প্রশাসনের নির্দেশে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করছি। তবে, দায়িত্বশীল জায়গা থেকে আমরা ফুল নিতে পারি না।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।