ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

বন্যায় শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দি

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২২
বন্যায় শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দি হলের বাইরে থাকা শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা বন্যায় ঘরে আটকা পড়েছেন।

শাবিপ্রবি, (সিলেট): সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় অঞ্চলের পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন এলাকা ও জনপদে হুঁ হুঁ করে বাড়ছে বন্যা।

সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে ডজনখানেক উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। শহর-উপশহরেও বন্যা পরিস্থিতি বেগতিক।

জানা গেছে, হলের বাইরে থাকা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ আবাসস্থল থেকে বের হতে পারছেন না। বিপাকে পড়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভারী বর্ষণের ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের আখালিয়া, তপোবন আবাসিক, সুরমা আবাসিক এলাকা ও নেহারীপাড়াসহ বিভিন্ন স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় হাঁটু পরিমাণ, কিছু জায়গায় কোমর অব্দি পানি। এসব এলাকার মেস ও বাসাবাড়িতে বসবাসরত শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অনেককেই দেখা গেছে প্লাস্টিকের নৌকায় প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন, অনেকে সাঁতরে বা পনিতে ভিজে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোয় বসবাস করেন বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে তাদের আসবাবসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে, শাবিপ্রবিতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। কিন্তু বন্যার কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

তপোবন এলাকায় থাকেন শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। বন্যার পানি মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে তো মেসে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে, তার ওপর বন্যার অস্বাস্থ্যকর পানির উপর দিয়ে বাজারে যাওয়া; সব মিলিয়ে বেগতিক অবস্থা।

বন্যার কারণে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন তারা। ক্যাম্পাস ও টিউশনিতে আস-যাওয়া নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সিলেটের উপশহরে বসবাস করেন সাফা খান রুবা। শাবিপ্রবির এ শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, তাদের ঘরে গত তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ। তাদের বাসার নিচতলা তলিয়ে গেছে। পরিস্থিতি খারাপ হয়েই যাচ্ছে। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে তারা কি করবেন তা বুঝতে পারছেন না। পানি সংকট দেখা দেওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা।

নগরীতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান কয়েকজন শিক্ষক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মাহবুবুর রশিদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চললেও বন্যার কারণে তৃতীয় বর্ষের একটি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। তিনি নিজেও সৃষ্ট বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছেন বলে জানান।

এসব বিষয়ে শাবিপ্রবির ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীনের সঙ্গে কথা হয়। বাংলানিউজকে তিনি জানান, বুধবার (১৮ মে) উপাচার্যের সঙ্গে ডিন, প্রক্টর ও বিভাগীয় প্রধানদের আলোচনা হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়, বন্যাসৃষ্ট পরিস্থিতিতে কোনো শিক্ষার্থী যদি তাদের সমস্যা বিভাগকে অবগত করে, তাহলে পরের পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে নেওয়া হতে পারে। অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা কী কী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন; তা জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ১৯ মে, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।