ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি, কুষ্টিয়া): ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোতে খাবারের দাম বাড়লেও মান ও পরিমাণ কমেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সেই সঙ্গে হলের খাবারে প্রায়শই পোকা-মাকড় ও আবর্জনা মিলছে।
তারা জানান, বিভিন্ন সময় হলের খাবারে টিকটিকি, চুল, শামুকসহ বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি হলের শিক্ষার্থীরা কিছুদিন পরপরই এসব অভিযোগ আনছেন।
তারা জানান, গত শুক্রবার (২০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের এক ছাত্রী খাবারে মাছি পেয়েছেন। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শেখ রাসেল হলে খাবারে পোকা, শহীদ জিয়াউর রহমান হলে চিলা পোকা এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও লালন শাহ হলের খাবারে শামুকও পেয়েছিলেন।
এছাড়াও আবাসিক হলগুলোর পচা-বাসি খাবার দেওয়ার অভিযোগ তো আছেই। এসব খাবার খেয়ে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা পেটের সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবের কারণেই খাবারের মান বাড়ছে না। উল্টো কয়েকদিন পরপরই দাম বাড়ানো হচ্ছে। হল ছাড়াও ক্যাম্পাসের হোটেলগুলোতেও খাবারের দাম অনেক বেড়েছে।
খালেদা জিয়া হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, 'খাবারের যে মান একে তো পুষ্টি নেই, তার ওপর মশা-মাছি, পোকা এসব প্রায় পাওয়া যায়। এসব অপরিষ্কার খাবার খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে হল ছেড়ে মেসে উঠেছেন। '
শেখ রাসেল হলের আবসিক শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দীন বলেন, 'ডাইনিংয়ে বাধ্য হয়ে খেতে হয়। হলের ভাতের অবস্থা তো খুবই খারাপ। হোটেলগুলোতে তো গলাকাটা দাম। '
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার ছুটির আগে আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মেন্যু ভেদে দাম ছিল ২২, ২৫ ও ৩০ টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ২৫, ৩০ ও ৩৫ ও ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে মেন্যু ভেদে ৫০ টাকা পর্যন্ত খাবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যম্পাসের হোটেলগুলোতেও প্রতিটি খাবারে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে দাম বাড়লেও খাবারের মান ও পরিমাণ আগের চেয়ে অনেক কমেছে।
তবে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ডাইনিং ম্যানেজাররা জানান, হল প্রশাসন থেকে খাবার বাবদ যে ভর্তুকি দেওয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়লেও পর্যাপ্ত ভতুর্কি না পাওয়ায় খাবারের দাম বাড়াতে হচ্ছে।
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিং ম্যানেজার রফিক বলেন, 'বাজারে সব কিছুর দাম বেশি হওয়ার কারণে আমাদের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। সে অনুপাতে ভর্তুকি পাচ্ছি না। প্রয়োজনীয় ভর্তুকি না পেলে ডাইনিং চালানো কষ্টকর। '
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, 'হলগুলোতে খাবারের দাম নির্ধারিত রয়েছে। ম্যানেজাররা কিছু আইটেম বাড়িয়ে টেকনিক্যালি দাম বাড়িয়েছেন। খাবারের মান বাড়ানোর জন্য একাধিকবার আমরা ডাইনিং ম্যানেজারদের সতর্ক করেছি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে রান্না করা থেকে পরিবেশনেও যেন কোনো ধরনের ত্রুটি না হয় সেজন্য আমরা কয়েকদিন পরপরই তদারকি করছি। '
তিনি আরও বলেন, 'খাবারে পোকামাকড় যেন না পড়ে সেজন্য আমি আমার হলের ডাইনিংয়ের আশেপাশের ড্রেনগুলো কয়েকদিন পর পরই পরিষ্কার করাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা যেহেতু অভিযোগ করছেন তাই শিগগিরিই আবার ডাইনিং ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসব। '
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২২
এমএমজেড