সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের আর মাত্র ২৭ দিন বাকি। এরইমধ্যে মনোনয়নপত্র জমাদান শেষ হয়েছে।
শনিবার (২০ মে) নাগরিক সমাবেশ করে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন না ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যে কারণে সিসিকে ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ভোটের মাঠে অনেকটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হচ্ছে।
মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ১১ প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কাতারে আছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান।
নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত তাদের হলফনামায় ঘেঁটে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (অনার্স)। তার নামে কোনো মামলা নেই।
এদিকে হলফনামায় টাকার অঢেল সম্পদ তথা টাকার পাহাড় নজরুল ইসলাম বাবুলের। আরেক প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের সম্পদও হাতে গোনা, টাকা আছে লাখের কোটায়। ফলে এবার টক্কর হবে দুই লাখপতির, এমনটা ভাবছেন সিসিকের নাগরিকরা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান দেখিয়েছেন, নিজের নামে নগদ টাকার পরিমাণ ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। স্ত্রীর নামে ৪৭ ভরি স্বর্ণ দেখালেও দাম উল্লেখ করেননি। নিজের নামে আসবাবপত্র দেখিয়েছেন দুটি টেলিভিশন, একটি ফ্রিজ ও দুটি এসি। আসবাবপত্রের মধ্যে আছে দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও দুটি আলমারি।
আনোয়ারুজ্জামানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে, কৃষি জমি আছে নিজ নামে তিন বিঘা, অকৃষি জমি ২৩ শতক, দালান একটি। বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট একটি। তবে এগুলোর মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন কৃষিখাতে এক লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে আয় ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা।
স্বশিক্ষিত হলেও পেশায় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুল। খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফিজা অ্যান্ড কোম্পানিসহ চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হলেন তিনি। কৃষিখাতে উপার্জন নেই ওই প্রার্থীর। তবে ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৯ টাকা। তার অস্থাবর সম্পদ আছে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার। নজরুলের স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।
ওই সম্পদের মধ্যে নজরুলের নগদ ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ১১০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১১ লাখ ১২ হাজার টাকা আছে। নিজ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৯ টাকা। বিএমডব্লিউ, টয়োটা প্রাডো গাড়ি আছে একটি করে। এর বাইরেও চারটি কার্গোভ্যান, আটটি কাভার্ডভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। স্বর্ণালঙ্কার নিজের নামে তিন লাখ ২০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে তিন লাখ টাকার দেখিয়েছেন।
নজরুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি দালান ও টিনশেড বাড়ি আছে। এগুলোর মূল্য উল্লেখ নেই। তার পাঁচ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকার ঋণ আছে। এরমধ্যে আইডিএলসি সিলেট শাখায় ঋণ এক কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫২৩ টাকা। ফিজা অ্যান্ড কোম্পানি থেকে ঋণ দেখিয়েছেন চার কোটি ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭৪ টাকা। সিলেটে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে বাবুলের। তবে সেটি তদন্তাধীন দেখিয়েছেন তিনি। অতীতে তিনটি মামলা ছিল তার নামে। তবে যেগুলোতে খালাস পেয়েছেন তিনি।
মেয়রপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন এলএলবি। পেশায় ব্যবসায়ী ওই প্রার্থী ২০১১ সালের একটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তার বাৎসরিক ব্যবসা ও দোকান ভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে নগদ এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি কম্পিউটার ও আসবাবপত্রের মূল্য দেখিয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার টাকা। স্ত্রীর ২০ ভরি স্বর্ণ দেখিয়েছেন। স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় বাড়ি/দালানের ছয় শতাংশের এক অংশের মালিক তিনি। তবে ব্যাংকে কোনো দায়দেনা নেই ওই প্রার্থীর।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
এনইউ/এএটি