সিলেট: আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি নীল নকশা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র পদে লাঙলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।
তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং প্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পকেটে।
বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টকে বের করে দেওয়ারও অভিযোগ করেন তিনি।
বুধবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৯নং ওয়ার্ডের আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে অবশ্য জাপার কোনো নেতাকর্মী ছিলেন না।
নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমি ভোট দিতে এসে দেখি আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে পেশিশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রের ভেতরে এজেন্ট ও ভোটারদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার কাছে ফোন এসেছে, আমার এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না ছাত্রলীগ ও যুবলীগের গুন্ডা-পান্ডারা। এভাবে যদি চলে, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। কারণা জনগণ লাঙলকে ভোট দিতে চায়। মানুষ যাতে লাঙলকে ভোট না দেয়, সেজন্য তারা হয়রানি করছে।
তবে নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনই কিছু জানাচ্ছেন না উল্লেখ করেন বাবুল। এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলেই জানান এই জাপা নেতা।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, নির্বাচনের আগে ভিডিও তৈরি করে আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে অসংখ্য অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পকেটে।
বাবুল আরও বলেন, আমি ১৯০টা কেন্দ্রে এজেন্ট দিয়েছি। কিন্তু সকাল থেকে ফোন পাচ্ছি, বেশিরভাগ কেন্দ্রের এজেন্টকেই বের করে দেওয়া হচ্ছে।
তার মতে, জনগণ লাঙলকে ভোট দিতে চায়। কিন্তু তারা নির্বাচন বানচাল করবে, ফলাফল পক্ষে নিয়ে যাবে।
এছাড়া সকালে ঘণ্টাখানেক ইভিএম মেশিন কাজ করেনি বলেও অভিযোগ করেন বাবুল।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো ভোট গ্রহণ চলছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১৯০ কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) ছাড়াও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন- নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এছাড়া মেয়র পদে রয়েছেন জাকের পার্টির প্রার্থী মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা, মো. শাহ জাহান মিয়া, মো. ছালাহ উদ্দিন এবং মো. আবদুল হানিফ।
অন্যদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সিসিকে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নগর এলাকার ৪২টি ওয়ার্ডের ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার এসব কেন্দ্রের এক হাজার ৩৬৪টি গোপন কক্ষে ভোটগ্রহণ চলছে।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট নির্বাচনী মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। এর বাইরেও ৪২টি ওয়ার্ডে একজন করে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের বলেন, সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে একজন করে ১৯০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, এক হাজার ৩৬৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ২ হাজার ৭৩৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। আর এক হাজার ৭৪২টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সবক’টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৩
এনইউ/এনএস